নির্মাতাদের ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থী হচ্ছেন যারা
২৬ ফেব্রুয়ারি নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’-এর নির্বাচন। এবার কারা প্রার্থী হচ্ছেন?
তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস গিল্ড’-এর নির্বাচন। ২০২১-২২ মেয়াদের জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে নিজেদের মতো করে প্রচারণায় নেমেছেন নির্মাতারা। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুষ্ঠ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
এবার নির্বাচনে বিভিন্ন পদের জন্য লড়ছেন টিভি নাটকের সুপরিচিত নির্মাতারা। প্রত্যেকেই তাদের জয়ের ব্যাপারে ভীষণ আশাবাদী।
সভাপতি পদে লড়ছেন এবার তিনজন। বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু ছাড়া বাকি দুজন হলেন দীপু হাজরা এবং অনন্ত হিরা। তিন সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন প্রাণেশ চন্দ্র চৌধুরী, ফরিদুল হাসান, মাসুম আজিজ, রফিক উল্লাহ সেলিম ও শিহাব শাহীন।
সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ এবং এস এম কামরুজ্জামান সাগর।
দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য লড়ছেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন চয়নিকা চৌধুরী, ফিরোজ খান, রকিবুল হাসান চৌধুরী (পিকলু)। অর্থ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সাজ্জাদ সনি।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য লড়ছেন তুহিন হোসেন, ফেরারী অমিত, এস এম মাসুদ করিম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদের জন্য লড়ছেন মনিরুজ্জামান নাহিদ এবং সহিদ উন নবী। প্রশিক্ষণ ও আর্কাইভ সম্পাদক মোস্তফা মনন এবং শহিদুল ইসলাম রুনু। তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক পদে লড়ছেন আনিসুল হক ইমেল এবং সঞ্জয় বড়ুয়া। আইন ও কল্যাণ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ আক্কাস, সাঈদ রহমান।
দম্পর সম্পাদক পদে গোলাম মুক্তাদির ও মুক্তি মাহমুদ। কার্যনির্বাহী পরিষদে রয়েছেন সাতজন। যারা প্রত্যেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। তারা হলেন আবু হায়াত মাহমুদ, ইমরাউল হুদা রাফাত, রিপন নবী, আনিসুজ্জামান আনিস, তারিক মুহাম্মদ হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান সুমন, হাফিজুর রহমান সুরুজ।
আবারও নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার কারণ জানিয়ে সভাপতি প্রার্থী সালাউদ্দিন লাভলু চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এবছর আমার নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিলো না। দেশের ছোটপর্দার নির্মাতাদের এই সংগঠনকে মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্তি করা ছাড়াও নির্মাতাদের জন্য হাসপাতালে সুবিধা, দেশের যেকোনো জায়গায় শুটিংয়ে গেলে পুলিশের বিশেষ সুবিধাসহ আরও বেশ কিছু সুবিধা নিশ্চিত করেছি। সরকারি ও আন্তসংগঠন লেভেলে কিছু কাজ হাফডান হয়ে আছে। যে কাজগুলো কোঅর্ডিনেট করতে গেলে এস এ হক অলিক (সাধারণ সম্পাদক) বা আমার থাকা প্রয়োজন বলে সবাই পরামর্শ দিলেন। সবাই বলছেন, নতুন একজনকে এসে এই কাজগুলো আবার জিরো থেকে শুরু করতে হবে! যেহেতু অলিক নির্বাচন করছেন না, তাই আমাকে সবার পরামর্শ মেনে নির্বাচন করতে হচ্ছে।
এবারও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছোট ও বড় পর্দার এই নির্মাতা।
শতাধিক খণ্ড নাটক বানিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন দীপু হাজরা। এবারই প্রথমবার সভাপতি পদপ্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংগঠনের উন্নয়নের জন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। উন্নয়নকে আরও গতিশীল করতে নেতৃত্বে আসতে চাই। তাছাড়া আমি মনে করি, ইয়াং জেনারেশনের যারা আছেন তাদের এগিয়ে আসা উচিত। সেজন্য আমি সভাপতি পদে নির্বাচন করছি।
শুরুতে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না বলে জানালেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোস্তফা কামাল রাজ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি নির্বাচনে লড়ছেন! রাজ বলেন, যারা গুণীজন মুরুব্বী তারা চান আমি নির্বাচন করি। তারা আমাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য কনভিন্স করেছিয়েছেন। তাদের কথা ফেলে দেয়ার সুযোগ নেই। সেজন্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
২০১৬-১৮ মেয়াদে ডিরেক্টরস গিল্ডের কমিটিতে সাংগাঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন এস এম কামরুজ্জামান সাগর। তিনি বলেন, ৯ বছর এই সংগঠন ঘুমন্ত ছিল। রি-অর্গানাইজের ডাক দিয়েছিলাম আমি।
এ বছর সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন প্রসঙ্গে কামরুজ্জামান সাগর বলেন, নির্মাতাদের কর্মক্ষেত্রকে আরও মসৃণ করতে, ডিসিপ্লিন তৈরি এবং আন্তঃসংগঠন গুলোর সমন্বয় করে নির্মাতাদের অধিকার বাস্তবায়ন করে সংগঠনকে জাতীয় পর্যায়ে রূপান্তর করা হবে আমার মূল কাজ।
১৫ ফেব্রুয়ারি ডিরেক্টরস গিল্ড থেকে নির্বাচনী তফসীল প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রার্থীদের বিস্তারিত পদ জানানো হয়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নগরীর শিল্পকলা একাডেমি অথবা এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিবার্ষিক মেয়াদের নির্বাচন। সেখানে নির্বাচিতরা মিলে ২১ জনের কমিটি গঠন করবেন। সকাল ৯ টায় শুরু হয়ে বিকেল ৫ টায় শেষ হবে এ নির্বাচন।
ডিরেক্টস গিল্ডের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব থাকবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস এম মহসিন। সহকারি নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন নরেশ ভুঁইয়া ও মাসুম রেজা।
কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য, প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন করা যাবেনা। প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজ পরিচয়ে নির্বাচন করতে হবে। ক্ষুদে বার্তা ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা যাবে না। এবার নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৩৯৭ জন।