কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও যাতে চিকিৎসক ও রোগীদের জন্য দ্রুততম সময়ে ভেন্টিলেটর তৈরি করতে পারে তাই নিজেদের পিউরিটান বেনেট™ ৫৬০ (পিবি ৫৬০) ভেন্টিলেটরটির ডিজাইন স্পেসিফিকেশন উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মেডিকেল প্রযুক্তি খাতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিক পিএলসি।
এ ঘোষণাটি সাম্প্রতিক এফডিএ নির্দেশনা এবং বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সরকারি সংস্থাসমূহের নিয়মের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের জন্যও এর পেটেন্ট উন্মুক্ত করেছে। এর ফলে, স্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারও খুব দ্রুত ভেন্টিলেটর উৎপাদন করতে পারবে। এছাড়াও, মেডট্রনিকের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের সদস্যরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভেন্টিলেটর উৎপাদনের জন্য এ দেশীয় প্রকৌশলীদের সহায়তা দেবে।
২০১০ সালে বাজারে আসে পিবি ৫৬০। বাজারে অবমুক্ত হওয়ার পর বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে বিক্রি হয় এই ভেন্টিলেটরটি। এ ভেন্টিলেটরটর প্রযুক্তিগত নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে উৎপাদন প্রতিষ্ঠান, উদ্ভাবক, স্টার্টআপ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহজেই এ ভেন্টিলেটর নকশা ও প্রস্তুত করতে পারবে। পিবি ৫৬০ ভেনটিলেটরটির সেবার নির্দেশিকা (ম্যানুয়াল), নকশা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি, উৎপাদন প্রক্রিয়া বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও ভেনটিলেটরটি তৈরির রূপরেখা ইতিমধ্যে এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল থেকে পিবি ৫৬০ ভেনটিলেটরটির ডিজাইন স্পেসিফিকেশন পাওয়া যাচ্ছে। অতি শিগগিরই সফটওয়্যার কোড ও অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে।
পিবি ৫৬০ ভেনটিলেটরটি সুবিন্যাস্ত, ওজনে হালকা ও বহনযোগ্য। এ কারণে, ভেনটিলেটরটির মাধ্যমে বয়স্ক ও শিশুদের সহজেই অক্সিজেন দেয়া যাবে।
ভেন্টিলেটরটি খুব সহজেই যে কোন পরিচর্যা কেন্দ্রে (ক্লিনিক্যাল সেটিং) ও বাসায় ব্যবহারের জন্য উপযোগী। এবং এর মাধ্যমে মোবাইল রেসপিরেটরি সাপোর্ট দেয়া যাবে।
এ নিয়ে মেডট্রনিকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মিনিম্যালি ইনভেসিভ থেরাপিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট বব হোয়াইট বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম হিসেবে ভেন্টিলেটর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয় এবং এই বৈশ্বিক সঙ্কট মোকাবিলায় সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অত্যন্ত জরুরি। ভেনটিলেটরের চাহিদার কথা বিবেচনা করে, গত কয়েক সপ্তাহে আমরা আমাদের পিউরিটান বেনেট™ ৯৮০ ভেনটিলেটরটির উৎপাদন বাড়িয়েছি। আমরা জানি, আমাদের আরও অনেক কিছু করার সক্ষমতা আছে এবং আমরা সে লক্ষ্যে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যেই পিবি ৫৬০ ভেনটিলেটরটির নকশা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এর ফলে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভেন্টিলেটরের সঙ্কট দূর করতে বৈশ্বিকভাবে ভেন্টিলেটরের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে।’
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও তীব্র শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় ভেন্টিলেটর কার্যকরী ভূমিকা রাখে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাজনিত রোগীদের ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করলে তারা শ্বাস নিতে পারে। রোগীকে ভেন্টিলেটর দেয়া হলে ওই সময় রোগীর ফুসফুস বিশ্রাম নিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসতে থাকে। অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখার মাধ্যমে ওই সময় রোগীর শাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে ভেন্টিলেটর। ভেনটিলেশনের সাহায্য ছাড়া, তীব্র শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের অনেক সময় বাঁচানো সম্ভব হয় না।