নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া হেলথকেয়ার জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক নববধূর মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসন হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়েছে। একইসাথে হাসপাতালের মালিককে আটক করেছে।
রোববার দুপুর বারোটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পারভেজ হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয়।
এর আগে ভোর চারটায় ভুল চিকিৎসায় মারা যান উপজেলার বড়াইগ্রামের রামেশ্বরপুর গ্রামের সবুজ হোসেনের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন (১৬)। মৃত সুমাইয়া বড়াইগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে তার বিয়ে হয়। সুমাইয়া একই উপজেলার নগর ইউনিয়নের গ্রামের রাহাবুল ইসলামের মেয়ে। আটককৃত হাসপাতাল মালিকের নাম আরশেদ আলী (৬৫)।
মৃত সুমাইয়ার মা মোমেনা খাতুন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় সুমাইয়ার পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা হলে তাকে বনপাড়া হেলথকেয়ার জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে ওই হাসপাতালে ডাক্তার সামিরা তাবাচ্ছুম সাথী (এমবিবিএস) তার অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করেন।
পরে তার অবস্থা খারাপ হলে রাত ৩টার দিকে ওই ডাক্তার পুনরায় সুমাইয়াকে ইনজেকশন পুশ করেন। এর এক ঘন্টা পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সুমাইয়া।
সকালে রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে ঘটনা তদন্তে আসেন বড়াইগ্রাম সার্কেল এএসপি হারুন-অর-রশিদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয় এবং মালিককে আটক করা হয়।
এদিকে সুমাইয়ার মৃত্যুর পর থেকে পলাতক রয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্স। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুমাইয়ার মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ জানান, হাসপাতালটির কোন কাগজপত্র ঠিক নাই। আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাই এবং পরীক্ষার যন্ত্রপাতি যথার্থ না থাকায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।