দেশের ৪টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার প্রায় ৩০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ দ্বারা গঠিত টাস্কফোর্স।
গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল নেয়ার অভিযোগ ওঠার পর ৭ দিনের মধ্যে ওই বিল সমন্বয় করার নির্দেশ পরিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ২৫ জুন বিদ্যুৎ বিভাগ একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তখন বলা হয়েছিল ৭ দিনের মধ্যে ভুতুড়ে বিলের সমাধান না করতে পারলে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
ওই টাস্কফোর্স ঢাকার দক্ষিণে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। এর মধ্যে ৪ জন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা, ৩৬ জন প্রকৌশলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া এবং ১৩ মিটার রিডার সুপারভাইজারকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তরের বিতরণ সংস্থা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ২ জন মিটার রিডারকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়া রাজশাহী ও রংপুরের ১৬ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেডের ২ জন মিটার রিডারকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ২৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শাও, বরখাস্ত সহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।
তবে দেশের সবচেয়ে বড় বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ৮০টি সমিতির যপসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ভুতুড়ে বিলের জন্য দায়ী তাদের ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য দেয়নি আরইবি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডও (পিডিবি) এখনো কোনো তথ্য দেয়নি।
জানা গেছে, টাস্কফোর্স কমিটির দেয়া সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিপিডিসি। সংস্থাটি
তাদের আদাবর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন, একই এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রায়হানুল আলম, সহকারী প্রকৌশলী মো. মজিবুল রহমান ভূঁইয়া ও কম্পিউটার ডেটা এন্ট্রি কো অর্ডিনেটর জেসমিন আহমেদ- এই ৪ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। অধিকতর তদন্ত শেষে এই ৪ জন দোষী প্রমাণিত হলে তাদেরকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া ৩৬টি আঞ্চলিক এর নির্বাহী প্রকৌশলীদের কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান চাকমা জানান, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ
মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে।
করোনার কারণে লকডাউনের মধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে প্রকৃত বিলের চেয়ে কোথাও কোথাও ৩ থেকে ১০ গুন বেশি বিল করার অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দোষীদের সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল