ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবনে হামলার সঙ্গে যারা জড়িত নয়, তাদের ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে সচিবালয়ে এক সমঝোতা বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ নেতারা। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শুরু হওয়া সেই বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্যদের সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবীর নানকও উপস্থিত ছিলেন।
‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে আন্দোলনরতদের পক্ষে এই বৈঠকে অংশ নেন দশজন ছাত্র ও দশজন ছাত্রী।
বাসভবনে হামলার বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান জানিয়েছিলেন, “তার বাসভবনে হামলার ঘটনা সাধারণ বিক্ষোভকারীদের হামলার কোনো ঘটনা ছিল না। প্রশিক্ষিত হামলাকারীরা মুখোশ পড়ে এসেছিল। তারা এসেছিল প্রাণনাশের জন্য।” সোমবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই দাবি করেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, উপাচার্যের বাসভবনে যে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে, তার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আন্দোলনকারীদের এই সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, রোববার তাদের আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে অন্তত ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের ‘বেলা ১২টার মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হলে বিকাল থেকে সারা বাংলায় ছাত্র জনতার দাবানল জ্বলবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
রোববার রাত দুইটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিটি ঘরের জানালার কাচসহ প্রায় সব আসবাবপত্র ভেঙে ফেলা হয়। বাথরুম ও রান্নাঘরও তছনছ করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো।
এদিকে, উপাচার্য বাসভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভাংচুরের প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার দুপুর ২টায় শাহবাগে অবস্থান নেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। রাত পৌনে ৮টার দিকে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে তারা ঢাবি ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।
পরে তারা ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সোমবার সকাল ১১টায় সরকারের বৈঠকের প্রস্তাব দেন।