চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘ ভাষানচর ’ দ্বীপে থাকার জায়গা মিলছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের

মানবিক দিক বিবেচনা করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে সরকার  ইতোমধ্যে ‘ভাষানচর’ দ্বীপটি বাছাই করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের সনাক্তকরণের জন্য তালিকা তৈরীর কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধির সঙ্গে  সাক্ষাতকালে এসব কথা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উদ্বাস্তুদের তালিকা করতে বিজিবিকে নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ করে নারী-শিশু, বৃদ্ধ যারা বেশি ভুক্তভোগী।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত ১১ দিনে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬শ’ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নতুন করে বানের মত আসা রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দেয়ার মত জায়গা নেই শরণার্থী শিবির গুলোতে। অধিক জনসংখ্যার ফলে দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। সাম্প্রতিক এই রোহিঙ্গা সংকটের আগেই বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীর বসবাস করে আসছিলো প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা। ফলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

এদিকে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালিতে বন বিভাগের ৩০০ একর জমিতে জেলা প্রশাসন তাদের থাকার ব্যবস্থা করছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ সাংবাদিকদের সামনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।

৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৪শ’র বেশি মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখো মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতে মারা গেছে আরও অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।