চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ভারতে ৮ মাসের শিশু ধর্ষণ, জীবন বাঁচাতে ৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আটমাস বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওই শিশুর এক চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। জীবন বাঁচাতে তিন ঘণ্টার এক জটিল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যেতে হয় ধর্ষণের শিকার ছোট্ট শিশুটিকে।

এ ঘটনায় ভারতে বাড়তে থাকা ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশজুড়ে। আটমাসের শিশুর ধর্ষণের ঘটনা রোববারের হলেও সোমবার দেশের গণসমাধ্যমে ফলাও করে তা প্রচার হলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, রোববার দিল্লির সুভাষ নগরের অধিবাসী শিশুটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রক্তাক্ত শিশুটিকে সাথে সাথে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী জটিল অপারেশনের পর তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ বিভাগে এনে রাখা হয়। তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

দিল্লি পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, অভিযুক্ত ২৮ বছর বয়সী ওই ভাই একজন দিনমজুর। সে নিজেও একজন বাবা। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে সে।

পুলিশ জানায়, ভিক্টিম মেয়ে শিশুটির বাবা-মা দু’জনেই কর্মজীবী। ঘটনার দিন সকালে এক ঘণ্টার জন্য দু’জনেই কাজে যেতে বাধ্য হওয়ায় তারা বাচ্চাটিকে এক আত্মীয়ের তত্ত্বাবধানে রেখে গেলে সেখান থেকে তাকে খেলার কথা বলে সরিয়ে নিয়ে যায় অভিযুক্ত ওই চাচাতো ভাই। ঘণ্টাখানেক পর গৃহকর্মী মা বাসায় ফিরে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।

দিল্লি কমিশন ফর উইমেন-এর প্রধান স্বাতী মালিওয়াল শিশুটিকে দেখে এসে একটি টুইট করেন। এতে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে আরও বেশি। স্বাতী বলেন, ‘এই লোকটা মানুষ নামে কলঙ্ক। নিজে একজন বাবা হওয়ার পরও সে এই কাজটা করল।’শিশু ধর্ষণ-ভারত

‘কী করার আছে? রাজধানীতে আটমাসের বাচ্চা নৃশংসভাবে ধর্ষণের পর কীভাবে আজ রাতে ঘুমাবে দিল্লি? আমরা কি এতটাই অনুভূতিহীন হয়ে গেছি, নাকি এটাকে আমরা কপালের লিখন হিসেবে মেনে নিয়েছি?’ পরে আরেক টুইটবার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন তিনি।

এছাড়াও স্বাতী আরও কঠোর আইন প্রণয়ন-বাস্তবায়ন এবং পুলিশের সক্ষমতা আরও বেশি বাড়ানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বরাবর সরাসরি আবেদনও জানিয়েছেন।

২০১২ সালে দিল্লিতে বাসে ২৩ বছরের শিক্ষার্থীর দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর থেকে ভারতজুড়ে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন-সমালোচনা বাড়তে থাকে। ওই ঘটনার পর টানা বিক্ষোভের মুখে তৎকালীন সরকার বাধ্য হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন কঠোরতর সাজা রেখে ধর্ষণবিরোধী আইন প্রণয়ন করতে।

কিন্তু তারপরও ধর্ষণ এবং নারী ও শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন চলছেই।