চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ভারতে ‘বর্ণ-ধর্মহীন’ সনদ পেলেন যে নারী

ভারতে প্রথমবারের মতো কোনো নারী সরকারের কাছ থেকে ‘নো কাস্ট নো রিলিজিয়ন’ বা বর্ণ-ধর্মহীন হিসেবে সার্টিফিকেট পেয়েছেন ৷ তামিল নাড়ুর ভেলোরের ৩৫ বছর বয়সী আইনজীবী স্নেহা পার্থিবরাজা পেয়েছেন ওই সনদ৷

ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮ জানায়,  স্নেহা জানিয়েছেন তিনি এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছেন, যেখানে কখনও জাতপাত, ধর্ম ছিল না৷ মানবধর্মই পরম ধর্ম বিশ্বাস করেছি৷

তিনি বলেন, জন্ম সনদ ও শিক্ষাগত সনদসহ তার সকল সনদে ‘কাস্ট’ (বর্ণ) এবং ‘ধর্ম’ এর স্থলে কোনো কিছু উল্লেখ করা নেই।  তারা আমাকে একজন ভারতীয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।

স্নেহা বলেন, প্রায় সব সনদে ‘কাস্ট’ এবং ‘ধর্ম’ অংশ পূরণে বাধ্যবাধকতা দেখে আমার উপলব্ধি হয়েছে আমাকে এমন সামাজিক সনদ পেতে হবে যেখানে ‘কোনো জাত থাকবে না, কোনো ধর্ম থাকবে না’।

এমন উপলব্ধি থেকে তিনি ২০১০ সালে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন।  কিন্তু তার দেশে এমন কোনো দৃষ্টান্ত না থাকায় তিনি ব্যর্থ হন।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে তিনি তার আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানিয়ে আবেদন করেন।  তাতে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি সরকারের কোনো পরিকল্পনা বা সুবিধা গ্রহণ করবেন না, সুতরাং তার অনুরোধ গ্রহণ করা হোক।

অবশেষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ৯ বছর লড়াইয়ের অবসান হয় স্নেহার।  ওই দিন তিরাপত্ত‌ুরের সাব-কালেক্টর বি. প্রিয়াঙ্কা পঙ্কজম স্নেহার হাতে ‘নো কাস্ট, নো রিলিজিয়ন’ সনদ তুলে দেন।

সনদ তুলে দিয়ে পঙ্কজম বলেন, যদিও আমরা এ ধরনের দৃষ্টান্ত পাইনি, তবে আমরা এগিয়ে যেতে চেয়েছি।  যেহেতু এটি অন্য কাউকে প্রভাবিত করবে না বা কারো সুযোগ নষ্ট করবে না, তাই আমরা তাকে সনদ তুলে দিচ্ছি।

দীর্ঘ সংগ্রামের পর এই সনদ পাওয়ায় অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্নেহাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আইনগতভাবে কাস্ট প্রথা বিলুপ্ত হযেছে ১৯৫০ সালে।  কিন্তু কেউ যদি ভারতে বসবাস করে তবে তাকে অনেক ফরম পূরণের সময় ‘কাস্ট’ এবং ‘ধর্ম’ উল্লেখ করতে হয়।

এরমধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা পূরণ করা বাধ্যতামূলক।  এবং অনেক ক্ষেত্রে তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগও থাকে না।  কিছু ক্ষেত্রে কাছাকাছি যে বিকল্প থাকে তা হলো ‘প্রয়োজ্য নয়’ বা ‘অন্যান্য’।

তবে এই প্রথম কেউ সুযোগ পেলো ‘‘কাস্ট’’ আর ‘‘ধর্ম’’ উল্লেখ না করেই ফরম পূরণের সুযোগ।  এখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদপ্রাপ্ত স্নেহা এই সুযোগ ভোগ করবেন।