‘ভারত নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দিলে অর্ধেক বাংলাদেশি ভারতে চলে আসবে’- ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এমন বক্তব্যের সামালোচনা করেছেন দেশটির প্রখ্যাত দু’জন কলামিস্ট করন থাপর এবং স্বাতি নারায়ণ। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত যৌক্তিকতা তুলে ধরে তারা বলছেন: ভারতের বৈধ নাগরিক হওয়ার থেকে বাংলাদেশের উইপোকা হওয়া ভালো।
রেড্ডির এ বক্তব্যকে তারা কূটনৈতিক ভাষা বিবর্জিত এবং আক্রমনাত্মক বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
তারা বলছেন: রেড্ডি বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানেন না। সবচেয়ে বাজে বিষয় হচ্ছে তিনি জানেন না যে, ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই ভালো করছে; অন্তত জীবনযাত্রার মানের দিক থেকে তো বটেই। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি যে হারে হচ্ছে, আমরা ভারতে তা নিয়ে শুধু হিংসাই করতে পারি। আর এটুকু আশা করতে পারি যে, আগামী দুই-তিন বছর পর হয়তো সেটা অর্জন করতে পারবো। প্রবৃদ্ধিতে আমরা বাংলাদেশের থেকে পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে গেছি। ২০১৯ আর্থিক বছরে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি ডাবল ডিজিটে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে ভারতেরটা দ্রুত কমছে।
করন এবং নারায়ণ আরও বলেন: বাংলাদেশে পুরুষ ও নারীর প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল যথাক্রমে ৭১ ও ৭৪ বছর। যেখানে ভারতের গড় আয়ু পুরুষ ও নারীর ৬৭ ও ৭০ বছর। কাজেই এই চিত্রটি বিশ্লেষণ করলে পার্থক্যটি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে যখন সবকিছু ভালো হচ্ছে তখন আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি।
রেড্ডির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে, অর্থনৈতিক কারণে কিছু ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন যে বক্তব্য রেখেছেন; তারা তার সমর্থন করেন। তারা বলেন: উন্নত জীবনের জন্য মানুষ অভিবাসী হয়। এখন নিশ্চিত ভাবে আমাদের এখানকার তুলনায় বাংলাদেশের জীবনমান ভালো। তাদের এ বক্তব্যের সমর্থনে পরিসংখ্যানগত উপাত্তও তুলে ধরেছেন তারা।
সেই সঙ্গে রেড্ডিকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেছেন: তাকে এটা মনে করিয়ে দেওয়া উচিত, আমেরিকা যদি এখন নাগরিকত্ব দিতে চাই তাহলে ভারতের অর্ধেক মানুষ চলে যাবে। সম্ভবত সে সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি হবে।