টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের পর শপথ নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির নতুন মন্ত্রিসভা। এই মন্ত্রিসভায় প্রথম নারী হিসেবে পূর্ণ অর্থমন্ত্রী পেয়েছে ভারত। এই ইতিহাস গড়েছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালেও তিনি অর্থনৈতিক সেক্টরে কার্যক্রম চালিয়েছেন। এবার ভারতের ইতিহাসে প্রথম পূর্ণ নারী অর্থমন্ত্রী হলেন তিনি।
নির্মলা সীতারমণের আগে ১৯৬৯ সালের জুলাই থেকে ১৯৭০ সালের জুন পর্যন্ত অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তবে তিনি পূর্ণ মেয়াদে অর্থমন্ত্রী ছিলেন না।
কে এই নির্মলা সীতারমণ?
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু প্রদেশে ১৯৫৯ সালের ১৮ আগস্ট মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নির্মলা সীতারমণ। বাবা ছিলেন ভারতীয় রেলের কর্মী। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পাস করেন নির্মলা।
১৯৮৬ সালে প্রভাকরকে বিয়ে করে তিনি লন্ডনে চলে যান। সফলতার সাথে কর্মজীবন শেষে স্থায়ীভাবে ১৯৯১ সালে ভারতে চলে আসেন তারা। সীতারমণ-প্রভাকর দম্পতির ঘরে এক মেয়ে রয়েছে। তার পরিবার কংগ্রেসের সমর্থক হলেও তিনি লন্ডনে থাকা অবস্থায় বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হন।
নির্মলা সীতারমণ রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৩ বছর আগে। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৬ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেয়া নির্মলা ২০১০ সালে দলের জাতীয় মুখপাত্র হিসেবে নির্বাচিত হন। মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দায়িত্বের সঙ্গে বিরোধী দলের সমালোচনা থেকে দল এবং দলের নেতা নরেন্দ্র মোদিকে রক্ষা করে গেছেন। তিনি শুধু দিল্লিতেই নয় গুজরাটেও তিনি সমানভাবে জনপ্রিয়।
নির্মলা সীতারমণ ২০০৩-২০০৫ সালে জাতীয় মহিলা কমিশনে কাজ করার সময় বিজেপির সিনিয়র নেতা সুষমা স্বরাজের সান্নিধ্যে আসেন। তার মেধা ও যোগ্যতায় মুগ্ধ হয়ে সুষমা স্বরাজ তাকে দলে যোগদান করান।
অন্ধ্র প্রদেশ থেকে রাজ্য সভার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে পরে তিনি রাজ্যসভার কর্ণাটকের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের জন্য সে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের গত মেয়াদে ২০১৪ সালে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ইন্দিরা গান্ধীর পর সীতারমণ ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় নারী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
মোদি নিজের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগী অমিত শাহকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়েছেন। অন্যদিকে নির্মলা সীতারমণকে সরিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী করেছেন রাজনাথ সিংকে। আর সাবেক কূটনীতিক এস জয়শঙ্করকে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব।
গতকাল শুক্রবার ৫৮ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়। বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি মন্ত্রী হয়েছেন উত্তর প্রদেশ থেকে, ১০ জন। এর পর আছে মহারাষ্ট্র (সাতজন) ও বিহার (ছয়জন)। তিনজন করে মন্ত্রী আছেন গুজরাট, রাজস্থান, হরিয়ানা ও কর্ণাটক রাজ্য থেকে।