দেশের বাজারে সীমান্ত পথে বৈধ বা অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত সরকার। যার প্রভাব পড়েছে দেশের মাংসের বাজারে। মাংসের সাথে সাথে দেশের চামড়া শিল্পেও আংশিক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকলেও ট্যানারি মালিকরা বলছেন, এর ফলে এ শিল্পের কোন ক্ষতি হবার সম্ভবনা নেই।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) জেনারেল সেক্রেটারি মোশারফ হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ হলে আমাদের স্থানীয় বা দেশীয় চামড়া শিল্পের কোনো ক্ষতি হবে না, কারণ আমরা আমাদের নিজেদের প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে পারি। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত গরু আছে।’
তাদের দাবি, সরকার যেনো সরকারিভাবে গরুর খামার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। এমন উদ্যোগ নিলে বাইরের কোনো উৎসের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না। দেশের চামড়া শিল্প স্বাবলম্বী হতে পারবে বলেও মনে করেন তিনি।
ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ করলে ঈদের আগে গরুর মাংসের বাজারে প্রভাব পড়বে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ঈদের কয়েকদিন বাকি আছে, পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মাংসের দাম বাড়ার কথা নয়। তবে, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেকৃতভাবে দাম বাড়ায়। এর জন্য তাদের শুধু প্রয়োজন অজুহাত।’
তবে দেশের মাংসের বাজারের ভারতীয় গরুর প্রভাব অনেক উল্লেখ করে বেসরকারিভাবে মাংস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল মিট’র একজন কর্মকতা বলেন, ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হবার ফলে আমাদের এখানে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। স্থানীয়বাজারে ভারতীয় গরু কম আসার কারণে দেশি গরুর দাম বেড়ে গেছে, যার ফলে আমাদেরও বেশি দাম দিয়ে দেশীয় গরু কিনতে হচ্ছে। দাম সে কারণে কিছুটা বাড়ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে, বিশেষ করে রমজানের আগে থেকেই গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। মাংস বিক্রেতাদের দাবি, গরুর সরবরাহ কম থাকায় তারা একরকম বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়িয়েছেন। নিম্ন আয়ের মানুষ মাংস খেতে পারছেন না, তেমনি মধ্যেবিত্তদেরও গরুর মাংস কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে।
পশু সম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, দেশে ২০১৩-১৪ সালে গরু উৎপাদিত হয়েছে দুই কোটি ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার। অন্যদিকে ভারত সরকারের হিসাব মতে, গত বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে ১৭ লাখ গরু প্রবেশ করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি জোটের এক নেতার ঘোষণা অনুসারে গরু জবাই বা পাচার করা হিন্দু বালিকাকে নির্যাতন বা মন্দির ধ্বংসের সমতুল্য অপরাধ। ওই ঘোষণার পরে সীমান্ত পথে বাংলাদেশে আসা গরুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় ভারত সরকার।