তিন ম্যাচ বাদে জেসন রয় ফিরলেন। সঙ্গে করে ফিরলেন ইংল্যান্ডের সৌভাগ্যও। পুরনো সঙ্গীকে পেয়ে হাত খুলে গেল জনি বেয়ারস্টোর। দুজনে বেধড়ক পেটালেন ভারতীয় বোলারদের। শেষপর্যন্ত অবশ্য কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। তারপরও বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হবে জিততে, কোহলিদের যে ৩৩৮ করার চ্যালেঞ্জ দিয়েছে মরগানের দল।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ আসরে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। ইংলিশদের দেয়া ৩২৮ রানের চ্যালেঞ্জে ৩২৯ রান করে রেকর্ড গড়েছিল আইরিশরা। ভারতকে জিততে হলে সেই রেকর্ডই ভাঙতে হবে।
যেকোনো দলের জন্য ৩৩৭ রানের লক্ষ্য অবশ্যই কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। রয়-বেয়ারস্টোরা মিলে যেভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন তাতে চারশর সম্ভাবনাও জেগেছিল। ধারাভাষ্য কক্ষে তখন বড় রানের একচোট আলোচনা। টিভিতে বারবার দেখানো হল সম্ভাব্য ৪১৯-৪৩০! বাস্তবে সেটি ঘটেনি। তার পেছনে কৃতিত্বটা ভারতীয় বোলারদেরই। বেশ খরুচে হলেও সামনের নামটি হবে মোহাম্মদ সামির।
এজবাস্টনের উইকেট দিনের শুরুতে যেরকম দেখাল, টস জিতে সিদ্ধান্ত নিতে একবারও ভাবতে হয়নি অধিনায়ক ইয়ন মরগানকে। ব্যাট তুলে দিলেন সতীর্থদের হাতে। অধিনায়ককে সঠিক প্রমাণ করলেন রয়-বেয়ারস্টো। উদ্বোধনী জুটি ২২ ওভার পর্যন্ত টিকে ১৬০ তুলেছে! চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী রানের জুটি।
কুলদীপ যাদবের করা ২৩তম ওভারের প্রথম বলে এসে ভাঙে জুটি। লংঅনে দ্বাদশ খেলোয়াড় রবীন্দ্র জাদেজার চোখজুড়ানো এক ক্যাচে ৫৭ বলে ৬৬ করে ফেরেন রয়। অপরপ্রান্তে সঙ্গী বেয়ারস্টোর রান তখন ৮৯।
পরে আরও আট ওভার টিকে ছিলেন বেয়ারস্টো। আফগানিস্তানের ম্যাচের ভুলটা এই ম্যাচে করেননি। ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি থেকে সে ম্যাচে আউট হয়েছিলেন ১০ রান দূরে। এদিন ৯০ বলে তুলে নিলেন বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরির পর আরও এগারো রান যোগ করেছেন বেয়ারস্টো। ৩২তম ওভারে এসে হাত খুলতে গিয়ে সামির বলে রিশভ পান্টকে তুলে দিলেন ক্যাচ। ১০৯ বল খেলে থামলেন ১১১ রানে। ১০ চারের সঙ্গে ৬ ছক্কা হাঁকিয়েছেন ঝলমলে ইনিংসটাতে।
এক ওভার পর দ্রুত ১ রান করা মরগানকেও ফিরিয়ে দেন সামি। তাতে রানের চাকাও খানিকটা শ্লথ হয়ে যায় ইংলিশদের। শুরুতে যে উড়ন্ত রানরেট ছিল, একটা সময় নেমে এলো সাড়ে পাঁচেরও নিচে।
বেয়ারস্টো-মরগানকে ফেরানোর পর যেন স্বাগতিকদের পেয়ে বসলেন সামি। পরে একে একে ফিরিয়ে দেন জো রুট (৪৪), জস বাটলার (২০) ও ক্রিস ওকসকেও (৭)। ৬৯ রান খরচায় প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নিয়েছেন ওয়ানডেতে। আসরে ৩ ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা ১৩!
সামির তোপ সামলে ইংলিশদের ৩৩৭ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন বেন স্টোকস। ৫৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় শেষ ওভারে গিয়ে আউট হয়েছেন ৭৯ রানে।