অবশেষে বিজেপিতেই যোগ দিলেন পশ্চিমবঙ্গের হেভিওয়েট তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সাথে নিয়ে এলেন ১০ জন বিধায়ক ও সাংসদ। এর বাইরেও যোগ দিয়েছেন বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা। যাদের কেউ সাবেক মন্ত্রী, সাবেক বিধায়ক।
শনিবার দুপুরে মেদিনীপুরের এক বিশাল জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ- এর কাছ থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শুভেন্দু অধিকারীসহ অন্য নেতারা।
বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়কদের মধ্যে রয়েছেন মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজা, কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, নাগরাকাটার তৃণমূল বিধায়ক সুকরা মুণ্ডা, উত্তর কাঁথির তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, গাজোলের তৃণমূল বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস, ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, তমলুকের সিপিআই বিধায়ক অশোক দিন্ডা এবং পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়।
এ ছাড়াও তৃণমূল থেকে নির্বাচিত পূর্ব বর্ধমানের বর্তমান সংসদ সদনস্য সুনীল মণ্ডল যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে৷ পাশাপাশি প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকে, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও যোগ দিয়েছেন৷ যোগদানের তালিকায় আছেন রাজ্যের তৃণমূল নেতা কর্নেল দীপ্তাংশ চৌধুরী৷
এর বাইরে তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্বেগ বাড়িয়ে প্রায় গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই শুভেন্দু অনুগামীরা দল থেকে পদত্যাগ করা শুরু করেছেন।
মেদিনীপুরে অমিত শাহের জনসভার মঞ্চ থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে দীর্ঘ দু’দশকেরও বেশি সময়ের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
‘তৃণমূলে পচন ধরেছে’
মঞ্চে ওঠার ঠিক আগে তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশে ছ’পাতার একটি খোলা চিঠি লেখেন শুভেন্দু। দীর্ঘ এই চিঠির মূল কথা–‘তৃণমূলে পচন ধরেছে। ১০ বছরে কোনও পরিবর্তন হয়নি। দলের থেকে ব্যক্তিস্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। এটা ভীষণ কষ্টদায়ক যে, বাইরে থেকে যাদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছে, তারাই দল চালাচ্ছেন। তৃণমূল স্তরের রাজনীতি সম্পর্কে যাদের কোনও ধারণা নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা অপমানিত হচ্ছেন।’
চিঠিতে তিনি তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আশাপ্রকাশ করেছেন, এবার নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপে সুষ্ঠু ও অবাধ ভাবে রাজ্যের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এই নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘শুভেন্দু আসায় দলের শক্তি বাড়ল। মমতা যতই চেঁচান, তৃণমূল ১০০ আসন পাবে না।’
এর আগে তৃণমূল ছাড়তেই শুভেন্দু অধিকারীর জন্য ক্যাটেগরির নিরাপত্তা ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। বুলেটপ্রুফ গাড়ি পেয়েছেন শুভেন্দু। তখনই বোঝা গিয়েছিল, গেরুয়া শিবিরে যাওয়া নিশ্চিত শুভেন্দুর।
সম্প্রতি মন্ত্রীত্ব ত্যাগের পাশাপাশি বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করেন শুভেন্দু। ছাড়েন বিধায়ক পদও। আর বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকেও।