চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ব্রিকসে বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি

কূটনৈতিকভাবেও ব্রিকস বাংলাদেশের জন্য কোন ক্ষতির কারণ হবে না, উল্টো
দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। তারা বলছেন,
ভারত, রাশিয়া ও চীন বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং ভালো বন্ধু। তাদের
কাছ থেকে ভালো কিছুই প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।

ব্রিকস হলো পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র– ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং সাউথ আফ্রিকার আদ্যক্ষরের সমন্বয়ে নামকরণকৃত বিশ্ব অর্থনীতির একটি জোট। ২০০৯ সাল থেকে ব্রিকস রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিক সম্মেলনে মিলিত হচ্ছে।

এবার ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্রিকসের অষ্টম সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচ সামিটে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ব্রিকস বাংলাদেশের জন্য অনুকূল কী অবস্থান সৃষ্টি করবে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ব্রিকসের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাজনক লাভের কথা হচ্ছে অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি ও পারস্পরিক সহযোগিতা।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী জনসংখ্যা, আয়তন এবং অর্থনৈতিক আকারের দিক থেকে বর্তমান বিশ্বের একটি বড় শক্তি ব্রিকস। এ দেশগুলোতে আছে বিশ্বের ৪০ শতাংশ জনসংখ্যা এবং ২৫ শতাংশ এলাকা এবং বৈশ্বিক জিডিপি’র প্রায় ২৫ শতাংশও এ দেশগুলোর। এমনকি বর্তমানে ব্রিকস সম্মিলিতভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ৪৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশ্বের যত পণ্যসেবা উৎপাদন হয় তার ২১ শতাংশ আসে এই পাঁচটি দেশ থেকে।

ব্রিকস ব্যাংক যদি তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সফল হয় তাহলে তা বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ’র বিকল্প হতে পারে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য না, তবে ব্রিকস একটি মাল্টিন্যাশনাল এজেন্সি। বাংলাদেশ যদি অন্যান্য দেশগুলোর মতো ব্রিকসের শেয়ার হোল্ডার বা স্পন্সর শেয়ার মেম্বার হতে পারে তাহলেও বাংলাদেশ লাভবান হবে। ‘এছাড়াও বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি ও ইকোনমিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন সহজ হবে।’

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ২০১৫ সালে চীনের নেতৃত্বে এশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক (এআইআইবি) প্রতিষ্ঠার পর ওই বছর জুলাই মাসে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিকসের পাঁচ অগ্রসরমান রাষ্ট্রের অর্থশক্তির যৌথ প্রচেষ্টায় গঠিত হয়েছে এই ব্যাংক।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো বিনির্মানে এই ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ-এর মতো ব্রিকস ব্যাংকও ঋণ দেবে ।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত এবং চীন দুই দেশই ব্রিকসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ায় ব্রিকস কার্যক্রমে বাইরে থেকে কিংবা অন্য কোনভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ কূটনৈতিকভাবেও নেতিবাচক কিছু বয়ে আনবে না বলে মনে করেন অধ্যাপক আবু আহমেদ এবং খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তারা বলেছেন, সম্মেলনে অংশ নিলে কখনোই কোন দেশের ক্ষতি হয় না।