চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বোলাররাই পার্থক্য গড়ে দেবে: চ্যাপেল

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে চার-ছক্কার ফুলঝুরি বইবে বলেই বিশ্বাস বোদ্ধাদের। অনেকেই তো ৫০০ রানের স্কোরও দেখতে পাচ্ছেন! তবে ইয়ান চ্যাপেলের মতে, ব্যাটসম্যান নন, বোলাররাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেবেন। ইএসপিএন-ক্রিকইনফোয় লেখা কলামে এমন অভিমতই ব্যক্ত করেছেন এ অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।

‘বিশ্বকাপের ভাগ্য গড়ে দিতে উইকেট নেয়ার পারঙ্গমতা বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। আধুনিক ক্রিকেটের মারকাটারি ব্যাটিং স্টাইল সত্ত্বেও নকআউট পর্বে ব্যাট হাতে ঝড় তোলা সহজ হবে না। যে টিম ধারাবাহিকভাবে উইকেট নিতে পারবে, বিশেষ করে মধ্য ওভারগুলোতে, তারাই বিশ্বকাপের শিরোপা জিতবে।’

সেই হিসেবে তিনটি দলকে এগিয়ে রাখছেন চ্যাপেল ভাইদের বড়জন, ‘এর ফলে সবচেয়ে ব্যালান্সড বোলিং অ্যাটাক রয়েছে এমন দলই শেষ হাসি হাসবে। সেদিক বিবেচনায় ইংল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে রয়েছে।’

‘জফরা আর্চার, মার্ক উড এবং ক্রিস ওকসের সঙ্গে মঈন আলি, আদিল রশিদ, বেন স্টোকস- যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপকে ভয় পাইয়ে দেয়ার মতো বোলিং লাইনআপ রয়েছে ইংল্যান্ডের। স্বাগতিকদের জন্য ভীতির সবচেয়ে বড় কারণ হল তাদের বিশ্বকাপের ইতিহাস এবং ঘরের সমর্থকদের আকাশচুম্বী প্রত্যাশা। যদি ইয়ন মরগান মাথা ঠাণ্ডা রেখে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন, তবে ইংল্যান্ড দারুণকিছু করে দেখাবে।’

‘ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী পেস অ্যাটাক না থাকলেও অসাধারণ বোলিং বৈচিত্র্য রয়েছে ভারতের। পছন্দের কন্ডিশনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন ভারতের পেসত্রয়ী। যদি পিচে কিছুটা আর্দ্রতা থাকে, তবে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামি ও ভুবনেশ্বর কুমার সেটির পুরোপুরি ফায়দা তুলে নেবে। অন্যদিকে যদি পিচ শুষ্ক হয় তবে, কুলদীপ যাদব ও জুজবেন্দ্র চাহাল প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করতে সক্ষম।’

‘ধারাবাহিক বোলিং নৈপুণ্য উপহার দেয়া জস হ্যাজেলউডকে মিস করলেও মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের উপস্থিতি অস্ট্রেলিয়ার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়ার সফলতা নির্ভর করবে নাথান কোল্টার-নাইল অথবা জেসন বেহরেনডোর্ফ কীভাবে তৃতীয় পেসারের ভূমিকা পালন করে সেটির উপর।’ এমনই বলছেন চ্যাপেল।

‘সাউথ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডের বোলিং বিভাগ বেশ শক্তিশালী। কাগিসো রাবাদা, ডেল স্টেইন এবং লুনগি এনগিডির সমন্বয়ে বিধ্বংসী পেসত্রয়ী রয়েছে প্রোটিয়াদের। উইকেট শিকারি স্পিনারের দায়িত্ব ভালোভাবে সামলাচ্ছেন ইমরান তাহির। উইকেট নেয়া আফ্রিকার জন্য কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে তাদের ব্যাটিং লাইনে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে।’

‘বিশ্বকাপের মতো আসরে তাদের তালগোল পাকিয়ে ফেলার অভ্যাস রয়েছে। বিশেষ করে নকআউট পর্বে এসে ছন্দ হারিয়ে ফেলে সাউথ আফ্রিকা। টুর্নামেন্টে ভালো করতে হলে এবার তাদের ব্যাটসম্যানদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করতে হবে।’ চ্যাপেলের টোটকা।

‘নিউজিল্যান্ডের বোলিং লাইন হয়তো সাউথ আফ্রিকার মতো ততোটা শক্তিশালী নয়। তবে সুইংয়ে তাদের বোলিং জুটি ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি নিশ্চিতভাবে বিধ্বংসী হয়ে উঠবে। নিউজিল্যান্ড প্রায় নিয়মিতই বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌঁছে এবং এবারও তারা সেই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা উপহার দিতে পারে। তবে ফাইনালে জায়গা করে নেয়ার মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নেই তাদের।’

‘২০১৯ বিশ্বকাপের ফরম্যাট অনুযায়ী, প্রতিটি দলকেই অপর নয়টি দলের মোকাবেলা করতে হবে। ফলে কোনো দলেরই সেরাটা নিংড়ে দেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এটিই টুর্নামেন্টকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। ঘরের মাঠে খেলায় যে বিরাট প্রত্যাশার চাপ রয়েছে, যদি ইংল্যান্ড সেটি কাটিয়ে উঠতে পারে তবে তাদের বোলিং অ্যাটাক বিজয়ের হাসি এনে দেবে।’ অন্য অনেকের মতো ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা এভাবেই দেখছেন চ্যাপেল।