পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে পার্বত্য অঞ্চলের নৃতাত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী মেতেছে বৈসাবী উৎসবে। একই সাথে চলছে বাংলা বর্ষবরণের প্রস্তুতিও। বর্ষবরণ ও বৈসাবী উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে পার্বত্য জনপদ। ১৫ দিনের কর্মসূচিতে প্রতিদিনই থাকবে নানা আয়োজন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা সারা বছরই কোনো না কোনো উৎসবে মেতে থাকলেও বৈসাবি উৎসব ছাড়িয়ে যায় সব উৎসবকে। সবার কাছে এই উৎসব ‘বৈসাবী’ নামে পরিচিত হলেও চাকমারা ‘বিজু’, ত্রিপুরারা ‘বৈসুক’ এবং মারমারা ‘সংগ্রাই’ নামে আলাদাভাবে উদযাপন করে এই উৎসব।
এক আদিবাসী জানালেন,‘ফুল বিজু, মূল বিজু আর নতুন বছরের এই তিন দিনই উৎসব হয়। পুরো এপ্রিল জুড়েই চলবে আমাদের উৎসব।’উৎসবের তৃতীয় দিনে চাকমা ও ত্রিপুরা গোষ্ঠি পালন করে গোজ্জাই পোজ্জা। একই দিন মারমা সম্প্রদায় উদযাপন করে জলকেলি উৎসব। ১২ এপ্রিল ভোরে নদীতে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে শুরু আনুষ্ঠানিকতা হয়ে শেষ হবে ১৫ এপ্রিল সাংগ্রাই জলকেলির মাধ্যমে।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা জানালেন ‘নতুন বছরকে স্বাগত জানানো, বরণ করে নেওয়ার জন্য এটাই আমাদের তিন পার্বত্য জেলার আদিবাসীদের সংস্কৃতি।’ উৎসবের দ্বিতীয় দিন ঘরে ঘরে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী খাবার পাচন। তা দিয়ে দিন ভর চলে অতিথি আপ্যায়ন।
রাঙ্গামাটির জুম ইসথেটিকস কাউন্সিলের সভাপতি, অ্যাডভোকেট মিহির বরণ চাকমা বলেন,‘পার্বত্য উপজেলায় যে আদিবাসীগুলো আছে তাদেরকে আমরা এক কাতারে আনার জন্য মূলত এই আদিবাসী মেলার আয়োজন করি।’ জুম ইসথেটিক্স কাউন্সিলের সহ-সাধারণ সম্পাদক পল্টু চাকমা বলেন, ‘গঙ্গাদেবীকে উদ্দেশ্য করে ফুল ভাসানো হয় যেন আগামী বছরটা সুন্দর হয়, পবিত্র হয়।
সবার জন্য যেন মঙ্গল বয়ে আনে।’ বৈসাবি উৎসবের আনন্দ শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়বে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।