ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা অনুযায়ী পাইলটদের বেতন ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হলে তাদের মনের ওপরে খারাপ প্রভাবে তারা বেপরোয়া হয়ে কিছু ঘটিয়ে বসতে পারেন বলে জানিয়েছে দেশটির সিনিয়র পাইলটরা।
বৃহস্পতিবার দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী হরদীপ পুরিকে লেখা এক চিঠিতে সিনিয়র পাইলটরা এ কথা জানায়।
করোনা মহামারীর সময় বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে চালু হয়েছে ‘বন্দে ভারত মিশন’। এয়ার ইন্ডিয়ার যে পাইলটরা বিদেশ থেকে ভারতীয়দের নিয়ে আসছেন, তাদের মধ্যে ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী হরদীপ পুরিকে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার সবচেয়ে সিনিয়র পাইলটরা।
তারা লিখেছেন, এই পরিস্থিতিতে সরকার যেভাবে বিমানচালকদের বেতন কাটার কথা ঘোষণা করেছে, তাতে তাদের পরিবারের ওপরে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
সিনিয়র পাইলটরা মন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছেন, “এই সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক এবং একতরফা। এর ফলে বিমানচালকদের মনের ওপরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তারা বেপরোয়া হয়ে কিছু ঘটিয়ে বসতে পারেন।”
বর্তমানে এয়ার ইন্ডিয়ার ঋণের পরিমাণ ৭০ হাজার কোটি টাকা। ওই বিমানসংস্থা বেচে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু এখনও কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি পাকা হয়নি। এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটরাই প্রথমে চিনের উহানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে এনেছিলেন। এখনও বিশ্বের নানা দেশ থেকে তারা ভারতীয়দের নিয়ে আসছেন।
বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ৭ লক্ষ ৭৩ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তার কথায়, “আটকে পড়া প্রত্যেক ভারতীয়ের উদ্দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”
গত ১৬ জুলাই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানচালকদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন হরদীপ পুরি।
তিনি বলেন, পাইলটদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এয়ার ইন্ডিয়ার অস্তিত্ব থাকবে কিনা। যদি তারা চান এই সংস্থা থাকুক, তাহলে বেতন কাটার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। যদি এয়ার ইন্ডিয়া বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে কেউ চাকরি পাবেন না।
এয়ার ইন্ডিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেতন ছাড়াই কয়েকজন কর্মীকে পাঁচ বছরের ছুটিতে পাঠানো হবে। সেই সিদ্ধান্তও সমর্থন করেন মন্ত্রী।
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়েছে, কোভিড মহামারীর মধ্যে ওই সংস্থার আর্থিক অবস্থা হয়ে এসেছে শোচনীয়। এইসময় কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠালে সংস্থার লাভ হবে। লাভবান হবেন কর্মীরাও।
মহামারীর জন্য বিশ্ব জুড়ে প্রায় বন্ধই রয়েছে উড়ান। এই অবস্থায় সংকটে পড়েছে বিমান সংস্থাগুলি। ব্যাপক ক্ষতি সামলানোর জন্য প্রায় প্রতিটি সংস্থাই কর্মীদের বেতন কমাচ্ছে, বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠাচ্ছে অথবা ছাঁটাই করছে।