বুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্বদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ।
শনিবার বুয়েটের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো: সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়: ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো।’
বিজ্ঞপ্তিটি বুয়েটের সকল অনুষদের ডীন, বিভাগ, অফিস প্রধান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, সেন্টার, ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর, আইসিটি পরিচালক, সকল হল প্রভোস্ট, সিকিউরিটি অফিসারসহ সর্বত্র বিতরণ করার কথা বলা হয়।
এর আগে গতকাল বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে এজাহারভুক্ত ১৯ আসামীকে সাময়িক বহিষ্কার করার কথা জানায়।
বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে তখন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
এসময় তিনি বলেন: বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি থাকবে না। আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং মামলার খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ বহন করবে। বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারকে চিঠি দেওয়া হবে। বুয়েটে র্যাগিং বন্ধ হবে।
বুয়েট উপাচার্যের মৌখিক এই ঘোষণার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তা লিখিত আকারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানান। তার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আজ লিখিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এরপর ভর্তি পরীক্ষার কারণে ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিলের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসাথে, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সহায়তা করারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এসময় আবরার হত্যার পর দ্রুত আইনী পদক্ষেপ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে এবং শিক্ষার্থীদের সহায়তা করায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে।
গত ৬ অক্টোবর রাত আটটার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে। ওই কক্ষে তাকে নির্যাতন করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রাত ৩টার দিকে হল থেকেই তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে।