ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী নারী শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আজ আত্নহুতি দিবস। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে প্রীতিলতা আত্মাহুতি দিয়ে অমরত্ব লাভ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সারাদেশ নানান কর্মসূচি পালিত হবে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রথম প্রহরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রীতিলতা হল প্রশাসন কর্তৃক প্রীতিলতা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
প্রীতিলতা ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিলো রাণী এবং ছদ্মনাম ফুলতারা। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ইউরোপিয়ান ক্লাবে ‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ’ ব্রিটিশদের এইরূপ অবমাননামূলক কথা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল তৎকালীন ভারতীয়রা। সে সময় প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ সফল করেন। পুরুষবেশী প্রীতিলতা সামরিক কায়দায় তার বাহিনীকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এই সময়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হলে তাৎক্ষণিকভাবে পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন। তার আত্মদান বিপ্লবীদের সশস্ত্র সংগ্রামে আরও উজ্জীবিত করে তোলে।
প্রীতিলতার মৃত্যুর পর তার পরিবারের অবস্থা নিয়ে কল্পনা দত্ত লিখেছেন: “প্রীতির বাবা শোকে দুঃখে পাগলের মত হয়ে গেলেন, কিন্তু প্রীতির মা গর্ব করে বলতেন, ‘আমার মেয়ে দেশের কাজে প্রাণ দিয়েছে’। তাদের দুঃখের পরিসীমা ছিল না, তবু তিনি সে দুঃখেকে দুঃখ মনে করেননি। ধাত্রীর কাজ নিয়ে তিনি সংসার চালিয়ে নিয়েছেন, আজো তাদের সেভাবে চলছে। প্রীতির বাবা প্রীতির দুঃখ ভুলতে পারেননি। আমাকে দেখলেই তার প্রীতির কথা মনে পড়ে যায়, দীর্ঘনিশ্বাস ফেলেন”।