‘যদি বিসিবি থেকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে বলে, এখনই ছেড়ে দেব। কোনো সমস্যা নেই। আর আমার সিদ্ধান্ত আমার কাছেই থাকুক।’ বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কথা এটি।
সোমবার ঢাকা প্লাটুন-চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এলিমিনেটর ম্যাচ ছাপিয়ে বিপিএলের সংবাদ সম্মেলন হয়ে উঠেছিল জাতীয় দল কেন্দ্রিক। মোটা দাগে বললে মাশরাফীর অবসর ভাবনা সংক্রান্ত।
সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নে জর্জর মাশরাফী জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ ভাবনার কথা। ঘটা করে দূরের কথা, মাঠ থেকেই যে অবসর নিতে চান না দেশসেরা অধিনায়ক। কারও জোরাজুরিতে নয়, খেলা ছাড়তে চান নিজের ইচ্ছামতো সময়ে।
‘আমি খেলতে চাই, পরিষ্কার করেই তো বলেছি। আগের দিনও পরিষ্কার করে বলেছি যে, ঢাকা লিগ খেলব। বিপিএল আছে বিপিএল খেলব। এটা উপভোগ করছি। মনে তো হয় না বলেছি জাতীয় দলে খেলব। বিপিএলে যে ৭০-৮০ জন স্থানীয় ক্রিকেটার খেলছে, তারা কি সবাই জাতীয় দলের আশা করে খেলছে। অবশ্যই না। খেলাটা খেলে যাচ্ছি। জাতীয় দল নিয়ে যারা আছে তারা ভাববে।’
‘জাতীয় দল কেন্দ্র করেই সবাই ক্রিকেট খেলে না। সামনে যে খেলা আসবে সেটাই উপভোগ করবো। জাতীয় দলের চিন্তা যারা করছে, বিসিবিতে যারা আছে তারা চিন্তা করবে। আর মনে হয় আমার অতটুকু স্বাধীনতা আছেই যে, আমি খেলতে চাই। কারো জোর করায় তো আর কিছু করবো না। বা অন্যকিছু।’
‘বাংলাদেশে অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা মাঠ থেকে অবসরে যায়নি। আমার থেকেও বড় খেলোয়াড় আছে। হাবিবুল বাশার সুমন ভাই তো বাংলাদেশের হয়ে ক্রাইসিস মোমেন্ট সবসময় রান করেছে। সেও মাঠ থেক অবসরে যায়নি। সুজন ভাই হয়তো পেরেছে। একটা সময় হয়তো ভাবতাম মাঠ থেকে নেব কি নেব না। দেখা যাক ভবিষ্যতে। এখন মনে হচ্ছে প্রয়োজন নেই।’
বিশ্বকাপ ভালো যায়নি মাশরাফীর। বল হাতে ছিলেন নির্বিষ। তখন থেকেই অধিনায়কের অবসর নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। পরে শ্রীলঙ্কা সফরেও ছিলেন অধিনায়ক। চোটের কারণে যেতে পারেননি। বিসিবি চেয়েছিল ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ আয়োজন করে দেশসেরা অধিনায়ককে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে। সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে নীরব ছিলেন মাশরাফী। এখন প্রয়োজন মনে করছেন না এসবের।
‘ক্রিকেট বোর্ডের কালকের দিন পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছিলাম। আজ থেকে আর নেই। সবসময় চিন্তা করি ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড়দের অভিভাবক। তাদের বিপক্ষে যাওয়াকে কখনোই আমার ক্যারিয়ারের প্রাইড মনে করিনি এবং কখনো মনেও করি না। মনে করি খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া উচিত তার ক্রিকেট বোর্ডকে। ক্রিকেট বোর্ডকেই দেখাশোনা করতে হয়। ক্রিকেট বোর্ডকে আন্তরিক ধন্যবাদ, আমার বিদায়ী ম্যাচ বা অবসরের বিষয়ে চিন্তা করার জন্য। স্পষ্ট কথা হল, ইচ্ছে নেই। যদি কখনো সুযোগ আসে তাহলে দেখা যাবে। আবার কার কাছ থেকে নেব সেটাও কথা। আমার কোনো ইচ্ছা নেই।’