সকল জল্পনা-কল্পনা আর নিরাশার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শনিবার শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে সকল দুঃসপ্নের অবসান হলো। পদ্মা নদীর জাজিরা পয়েন্টে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয়েছে এই স্প্যান। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত হলো এক নতুন অধ্যায়। বেশ কিছু কারণে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। কেননা এই প্রকল্পের কাজ তদারকি বিষয়ে পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পাওয়ার উদ্দেশ্যে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, এমন অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ বাতিল করেছিল বিশ্বব্যাংক। শুধু তাই নয়, এরপর একে একে অন্য সহযোগীদেরও এই প্রকল্প থেকে সরিয়ে নেয় তারা। এর ফলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছিল।
Side Ad
300 X 250
এমনকি বিশ্বব্যাংকের অভিযোগে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এরপর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে পরবর্তীতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র থাকার ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কোন প্রমাণ পাননি কানাডার আদালত। অথচ ভুয়া অভিযোগ তুলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছিল তারা। তাই স্বপ্নের পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়ার খবর বাংলাদেশের জন্য গর্বের। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করা এই কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তবে পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে বলে কেউ যাতে এখানে আবারও দুর্নীতি করার কোন সুযোগ না পায় সেই বিষয়েও সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার এই প্রকল্পের বাজেট বাড়ানো হয়েছে। এই বিষয়গুলো সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এবং ধারাবাহিকভাবে সেতুর কাজ এগিয়ে গেলে অচিরেই সারাবিশ্ব দেখবে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু আর স্বপ্ন নয়, বরং বাংলাদেশের সক্ষমতায় এটা বাস্তব।