জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘সি’ ইউনিটে প্রক্সির মাধ্যমে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হতে এসে আটক হয়েছে এক শিক্ষার্থী। আটককৃত ওই শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর নুর অয়ন। সে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মো. মাসুদ রানার ছেলে।
বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় কলা মানবিক অনুষদের (‘সি’ ইউনিট) অন্তর্ভূক্ত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হতে আসলে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তাকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আটককৃত শিক্ষার্থী কলা মানবিক অনুষদের (‘সি’ ইউনিট) মেধা তালিকায় বিজ্ঞান শাখা থেকে ৪৪ তম হয়েছিলেন। আর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভর্তির সময় ১ম স্থানে ছিলেন বলে জানা গেছে।
ভর্তি কমিটির দায়িত্বে থাকা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুরুল কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, পরীক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তরপত্রে বাংলা ও ইংরেজিতে দুটি পৃথক বাক্য লিখতে হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীকে সাক্ষাৎকারের সময় আবারো শনাক্ত করার জন্য ওই বিষয়টি লিখতে দেয়া হয়। সোমবার (৫ নভেম্বর) সাক্ষাৎকারে তার সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর তার সম্পর্কে কিছুটা সন্দেহ হলে তাকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখি।
আজকে সে ভর্তি হতে আসলে পুনরায় তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গেলে তার জালিয়াতির ব্যাপারটি প্রমাণিত হয়।
কলা ও মানবিক অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে তথ্য যাচাই-বাছাই করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রক্টর অফিসে খবর দিলে তারা তাকে নিয়ে যায়।’
অাটকৃত ওই শিক্ষার্থী তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ক্যামেস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম তুশিনের সাথে ৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় সুযোগ পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয়। পরীক্ষায় টিকিয়ে দেয়ার পর ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে তাদের (জালিয়াতি চক্র) কাছে রাখা তার সকল একাডেমিক মূল কাগজপত্র ছুটিয়ে আনতে হয়েছে। টাকা দেয়ার বিষয়টি সাথে থাকা তার বাবা মো. মাসুদ রানাও স্বীকার করেছেন।
এই ব্যাপারে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তুশিন বলেন, এই ব্যাপারে সবকিছু বড় ভাইয়েরা জানেন। আমি শুধু অয়নকে তাদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা বলেন, ‘ডীন অফিসের পক্ষ থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে প্রক্টর অফিসে আনা হয়েছিলো। সন্ধ্যায় তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।’
আশুলিয়া থানার এসআই রাসেল মোল্লা বলেন, তাকে এবং তার বাবাকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে। পরীক্ষায় জালিয়াতি সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।