জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে আনুগত্য নয়, মেধার স্ফুরণ চাইতেন। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়কে কেরানি এবং চাকরিজীবী তৈরির কেন্দ্র করতে নয়, তিনি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে মনোনিবেশ করেছিলেন।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নেওয়া বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এ আয়োজন করে।
আলোচনা সভার মূল প্রতিপাদ্য ছিলো ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের অ্যালামনাই ফ্লোরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ও আদর্শ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তিনি যুগ যুগ ধরে অনুুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শাইখ সিরাজ তার বক্তব্যে কৃষি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু যে সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন, তা তুলে ধরেন৷
তিনি বলেন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিবিদদের বলেছেন, ‘আপনারা যারা কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন; তাদের গ্রামে গিয়ে কৃষি কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’
“১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ কর্তৃক আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে, কৃষি নিয়ে আগামীর পরিকল্পনা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের মতই কৃষিবিদদের চাকরির ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির ভূমিকার কথা বলেছেন।”
সেসময় শাইখ সিরাজ আরও বলেন: বঙ্গবন্ধু তরুণদের কৃষিশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সর্বপ্রথম আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার প্রতি কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে আজাদ।
আলোচনায় বাংলাদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট বরেণ্য শিক্ষাবিদসহ সারাবিশ্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষাবিদরা মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহসচিব রঞ্জন কর্মকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে প্যানেলিস্ট হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন।
এছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আলোচকবৃন্দ মূল প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
তাদের মধ্যে ছিলেন ভারতের বর্ধমান কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু চক্রবর্তী, কানাডার সাইমন ফ্রেজার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. হাবিবা জামান, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডের অধ্যাপক ড. বিরু প্রকাশ পাল, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকুয়ের ল’ স্কুলের অধ্যাপক ড. শওকত আলম, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লিডস্ এর অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ মোশফিক উদ্দীন, অস্ট্রেলিয়ার দি ইউনিভার্সিটি অব সিডনি-এর অধ্যাপ সৈয়দা জাকিয়া হোসেন, নিউজিল্যান্ডের ওটাগো ইউনিভার্সিটি ও ওকল্যাণ্ড ইনস্টিটিউট অব স্টাডিজ হতে অধ্যাপক ড. শ্যামল দাস এবং মোহাম্মদ এরশাদ আলী।
অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ মূল প্রবন্ধের উপর তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং উচ্চশিক্ষায় পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করেন।