২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার ‘কাল্পনিক-স্বপ্ন’ না বুনে এশিয়া কাপের জন্য কাজ শুরু করে দেয়া উচিত বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ ও ফুটবল বিশ্লেষক মারুফুল হক। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য লাল-সবুজদের প্রতিপক্ষ ঠিক হয়ে গেলেও আবার এখনো পরিকল্পনাহীন অবস্থায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
গত মাসে প্রাক-বাছাইপর্বে লাওসের বিপক্ষে স্মরণীয় জয়ে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘ই’তে লাল-সবুজদের প্রতিপক্ষ ওমান, ভারত, আফগানিস্তান এবং ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতার। সবগুলো দলই র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
বিশ্বকাপ বাছাই নিয়ে আগেভাগে পরিকল্পনা না সাজালে গোলের খেলা ফুটবলে ভরাডুবির আশংকা আছে জামাল-মামুনুলদের। তবে বিশ্বকাপের কাল্পনিক চিন্তা বাদ দিয়ে আপাতত এশিয়া কাপের জন্য সেরাটা দিতে পরামর্শ মারুফুলের।
‘কাতার ও ওমান যেহেতু আছে গ্রুপে, সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্বকাপ টার্গেট করলে হবে না। আমাদের লক্ষ্য থাকতে হবে এশিয়া কাপ এবং যেকোনো মূল্যে তৃতীয় স্থানে থেকে বাছাইপর্ব শেষ করা। তাহলে এশিয়া কাপে সরাসরি খেলার সুযোগ তৈরি হবে। এটা সম্ভব। আমরা ভারত-আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলে এসেছি। তাদের শক্তি-দুর্বলতার জায়গাগুলো আমাদের জানা। পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি খেলা যায় তাহলে এশিয়া কাপে খেলা খুব সম্ভব। কাতার-ওমানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ খেলা আকাশ-কুসুম কল্পনা।’
আগামী ছয় মাসে হোম-অ্যাওয়ে দুই কন্ডিশনে অন্তত ৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা নিশ্চিত বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে, ১০ সেপ্টেম্বর। তবে তাদের স্বাগতিক ভেন্যু কোথায় হবে সেটা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি আফগানরা। নিরাপত্তা শঙ্কায় ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে বঞ্চিত দলটি।
ঘরে-বাইরে যেখানেই খেলা হোক না কেনো, বাছাইপর্বের আগে কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য ফেডারেশনকে পরামর্শ দিয়েছেন মারুফুল। আর ঘরের মাঠের পূর্ণ ফায়দা নেয়ার মতো পরিপক্বতা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তৈরি হয়নি বলেও মত তার।
‘একটা দলের শক্তি বুঝতে হবে। একটা দল যখন পূর্ণ শক্তি নিয়ে খেলে তখন ঘরের মাঠ-দর্শকের সুবিধাটা নেয়া যায়। কিন্তু ওই পর্যায়ে লড়াই করার জন্য আমরা এখন পর্যন্ত প্রস্তুত না। এজন্যই আমরা ঘরের সুবিধাটা নিতে পারছি না।’
মারুফুলের কথাই যেন শেষপর্যন্ত ফলে গেছে অতীতে। আবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে খেলার মতো বড় সুযোগ পাওয়ার পরও অনেকটা পরিকল্পনাহীন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কবে হবে ক্যাম্পিং সেটা পর্যন্ত ঠিকই করে উঠতে পারেনি লাল-সবুজ ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি। মাসের শেষ নাগাদ জাতীয় কমিটির সভার পর ঠিক করা হবে দলের প্রস্তুতির বিষয়টি।
অন্যদিকে ছুটিতে দেশের বাইরে আছেন বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ জেমি ডে। মাস শেষে ফিরেই বুঝে নেবেন দলের দায়িত্ব। তবে ক্যাম্প শুরু করলেই যে সবাইকে পাওয়া যাবে এমনও নয়। ক্যাম্পের বাইরে থাকবেন আবাহনীর ফুটবলাররা। ২১ ও ২৮ আগস্ট এএফসি ইন্টারজোনাল সেমিফাইনালে নর্থ কোরিয়ান ক্লাব ‘এপ্রিল ২৫’ দলের মুখোমুখি হবে আকাশী-নীল বাহিনী। সবকিছু মাথায় রেখেই জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। দলের ক্যাম্প কোথায় হবে সেটি জাতীয় কমিটির সভার পর ঠিক করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।