চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বিদেশিদের ছাড়া আইপিএল, নাকি আইপিএলই বাতিল

চলছে বদ্ধদুয়ার টুর্নামেন্ট আয়োজনের ভাবনাও

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত সরকারের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশিদের ভিসা না দেয়ার সিদ্ধান্তের পর দুয়ারে কড়া নাড়তে থাকা আইপিএল আসরে ভিনদেশি খেলোয়াড়দের পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তেরি হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটির ত্রয়োদশ আসর মাঠে গড়ানোর সূচি ২৯ মার্চ।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, ১৩ মার্চ রাত ১২টা থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কূটনৈতিক অঙ্গনের মতো বিশেষ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ছাড়া কাউকে দেশটি ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হবে না। বিজনেস ক্যাটাগরিতে আইপিএল খেলতে আসা বিদেশি ক্রিকেটারদের তাতে অন্তত মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে আসা বন্ধ হয়ে গেছে।

এমনকি ২০২০ আইপিএলের পুরো আসরেই বিদেশি খেলোয়াড়দের পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকছে। ভারত সরকার যদি মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত ভিসা না দেয়ার সিদ্ধান্ত আরও বর্ধিত করে, তাহলে এবার আইপিএলে দেখা যাবে না ওয়ার্নার, রুট, ডি ভিলিয়ার্সদের।

অবশ্য আইপিএলের এবারের আসর মাঠে গড়ানোর সম্ভাবনাই সুতোয় ঝুলছে। একদিন আগে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি বেশ জোর দিয়েই বলেছিলেন, যথাসময়েই শুরু হবে ত্রয়োদশ আইপিএল। কিন্তু বোর্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানাচ্ছে, মুম্বাইয়ে টুর্নামেন্টের গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে ১৪ মার্চ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে সেখান থেকেই। সিদ্ধান্ত যে টুর্নামেন্ট পেছানোর দিকেই ঝুঁকে, ইঙ্গিত মিলেছে সেটিরও। আবার টুর্নামেন্ট দর্শকহীনভাবে আয়োজনের কথাও ভাবছে বিসিসিআই।

বিসিসিআই সভাপতি গাঙ্গুলির টুর্নামেন্ট আয়োজনের অটল সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও শুরু হয়ে গেছে। মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ে করণীয় বিষয়ক জরুরি সভা করে আইপিএলের টিকেট বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

রাজ্যের স্কুল এবং আইপিএলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে স্পষ্টই জানিয়ে দেন, টিকেট বিক্রি চলবে না। রাজ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হুমকির মুখে পড়ে আছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স-চেন্নাই সুপার কিংসের উদ্বোধনী ম্যাচ। ২৯ মার্চ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা যেটি।

মহারাষ্ট্রের একজন সিনিয়র মন্ত্রী আইপিএল বিতর্কের মাঝে অনেকটা হুমকির সুরেই বলেছেন মাঠে কোনো দর্শক ঢুকতে দেয়া হবে না, চাইলে ফাঁকা গ্যালারির সামনে চার-ছয় পেটাও, ‘করোনা ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, আমরা সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাখতে চাই। আমরা রাজ্যে কোনরকম জনসমাবেশ দেখতে চাই না। আর সবার জন্য পরামর্শ থাকবে এসব জনসমাগম এড়িয়ে চলার। মন্ত্রীসভায় আইপিএল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি শর্ত মেনেই আইপিএল চলতে পারে। তা হল, দর্শকদের কাছে কোনো টিকেট বিক্রি করা যাবে না।’

‘এবছর টিকেট বিক্রি না করেও আইপিএল চালানো সম্ভব। কারণ তাদের আয়ের মূল অংশটা আসে টিভিতে সম্প্রচার, বিজ্ঞাপন থেকে। রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার বিষয়টি মন্ত্রীসভাকে জানিয়েছেন। তারপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ এমন জানিয়েছেন আরেক মন্ত্রী।

মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্তের পর একই নির্দেশনা আসতে পারে কর্ণাটক রাজ্য থেকেও। সেখানকার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে আইপিএল বন্ধেরই অনুরোধ জানিয়ে।

অন্যদিকে, এ দুই রাজ্যকে টেক্কা দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে আইপিএল বন্ধের জন্য রীতিমতো আপিল করেছেন একজন আইনজীবী। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এমএম সুনদ্রেশ ও কৃষ্ণণ রামস্বামীর ডিভিশন বেঞ্চের সামনে সেই আইনজীবী অ্যালেক্স বেনজিগরের আবেদনের শুনানি হবে।

ভারতে এরইমধ্যে সনাক্ত হয়েছে ৬০ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী। সারাবিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৪ হাজার। বাতিল হয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ভারতের ম্যাচগুলো। যদিও বৃহস্পতিবার থেকে মাঠে গড়িয়েছে কোহলি-রোহিতদের সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটি।