৬ মাসের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দিয়েছিলেন তা প্রতিপালনে আরও ১ বছর সময়ে চেয়ে বিজিএমইএ’র করা আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আজ বেলা ১১:৩০ মিনিটে এ বিষয়ে আদেশের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।
আদালতে বিজিএমইএ’র পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মঈনুল ইসলাম। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালিন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত আগামী ৫ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করে দেন।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় সময়ের আবেদন করা হয় বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, বিজিএমইএ-এর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম।
সেদিন তিনি বলেন, ‘হাতিরঝিলে অবস্থিত ওই ভবন থেকে সব কিছু সরাতে আরও এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এরইমধ্যে রাজউক উত্তরায় জমি দিয়েছে। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। তারপর ওখানে সব কিছু সরিয়ে নিতে হবে। আমাদের আবেদনটি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিয়েছি।’
গত ১২ মার্চ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) এর ভবন ৬ মাসের মধ্যে ভাঙার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ানবাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ’ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই প্রতিবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনিরউদ্দিন আদালতে উপস্থাপন করেন।
এর পরদিন বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙ্গার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। এরপর ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ’র ভবন ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় দেন।
রায়ে বিজিএমইএকে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙ্গতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিলো সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।
পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপির পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
যেটা ২০১৬ সালের ২ জুন খারিজ হয়ে যায়। এরপর বিজিএমইএ রায় পুর্নবিবেচনা চেয়ে (রিভিউ) আবেদন করেন। গত ৫ মার্চ সে আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভবন নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে বিজিএমইএ ভবনটি তাদের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছে।