সেনা শাসনের বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভ ঠেকাতে ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রাম বন্ধের পর এবার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার।
‘নেটব্লকস ইন্টারনেট অবজারভেটরি’র বরাতে বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, মিয়ানমারের টুইটার ও ইনস্টাগ্রামকে ব্লক করার নির্দেশ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশটি প্রায় সম্পূর্ণভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সংযোগ সাধারণ অবস্থার চেয়ে ১৬ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে।
গত সোমবার সেনা অভ্যুত্থানের তিন দিন পর ইন্টারনেট সেবাদাতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্লক করে দেওয়ার। এরপর হাজার হাজার ব্যবহারকারী টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে সরব হয়। তারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হ্যাশট্যাগ চালু করে।
সেই ঘটনার পর টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামও বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর আজকে ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়ার খবর এলো।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর ইয়াঙ্গুনে জনগণ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করে। তারা ‘সামরিক স্বৈরশাসক পরাজিত, পরাজিত; গণতন্ত্র বিজয়ী বিজয়ী’ স্লোগান দেয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে, ইয়াঙ্গুনে কেন্দ্রীয় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে এ বিষয়ে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জনতা গণতন্ত্রের দাবিতে মাঠে নামলেও মিয়ারমারের সামরিক জান্তা দাবি করছে, সেখানে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। কিন্তু সাধারণের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। থালা-বাটি বাজিয়ে, গাড়ির হর্ন বাজিয়ে, বিপ্লবী গান গেয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এমনকি রাতভর চলছে বিক্ষোভ কর্মসূচী।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গত সোমবার সকালে ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী।
তবে সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে প্রতিবাদ শুরু করেছে মিয়ানমারের বিভিন্ন পেশাজীবী এবং নাগরিকদের বড় একটা অংশ।
অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চি কোথায় আছেন তা এখনও পরিস্কার করেনি দেশটির সেনাবাহিনী। যদিও তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি অভিযোগ; আমদানি-রপ্তানি আইন ভঙ্গ এবং অবৈধভাবে যোগাযোগ ডিভাইস (ওয়াকিটকি) ব্যবহার করা।
এই অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন দেশটির একটি আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।