‘আমরা আসলে ৪০ মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি। ভারতের সবাই এই সময়ের ভেতর ৫০-৭০টি ম্যাচ খেলেছে। আমরা একটাও খেলিনি। এখানেই গ্যাপ হয়ে গেছে। আমার মনে হয় বাংলাদেশ আগের জায়গায় আছে। কিন্তু ভারত অনেক এগিয়েছে।’ ভারতের সাথে ৯-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন এভাবেই।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিতে শুক্রবার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে শক্তিশালী সাউথ কোরিয়ার বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগেরদিন অধিনায়কের বলা উপরের কথাগুলোই বিস্তারিতভাবে তুলে ধরলেন আশরাফুলদের কোচ গোবিনাথ কৃষ্ণমূর্তি।
রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ বললেন, ‘আমরা ৪০ মাস কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলিনি। এরমধ্যে ভারত ৮১টি ম্যাচ খেলেছে। অলিম্পিকে তারা তৃতীয় (ব্রোঞ্জ পদক) হয়েছে।’
‘এটা ঠিক, আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করে কেন দলকে উজ্জীবিত করতে পারছ না? বিষয়টা মোটেও উজ্জীবিত করা বা না করতে পারার নয়। মূল ব্যাপার হল একটানা কতগুলো ম্যাচ খেলার ভেতর দল আছে সেটা। খেলা না থাকলে কোনো ভুল নিয়ে কথা বলতে পারি না। উন্নতি করার ক্ষেত্রে সময় দেয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিকঠাক সময়ই পাইনি। টুর্নামেন্টের আগে ছেলেদের নিয়ে মাত্র ১০ দিন কাজ করেছি।’
হকি ফেডারেশনের কাছে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ চাইলেন গোবিনাথ, ‘যদি স্বাগতিক হিসেবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে চান, সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় দলের প্রোগ্রাম থাকতে হবে। আমাদের বিকেএসপির প্রোগ্রাম আছে। জুনিয়র লেভেল থেকে সিনিয়র লেভেল, সব জায়গায় প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। বিকেএসপি ও স্কুল পর্যায়ের সঙ্গে জাতীয় দলের বিশাল ঘাটতি আছে, যা পূরণ করতে হবে।’
ভারতের বিপক্ষে শিষ্যরা সেরাটা দিতে পেরেছিলেন? গোবিনাথ বললেন, ‘আমি মনে করি তারা নিজেদের শতভাগ দিয়েই চেষ্টা করেছে। প্রথম আর দ্বিতীয় কোয়ার্টারে তারা যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। ভারতের সঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ কোয়ার্টারে আমাদের ফিটনেস লেভেল পড়ে গিয়েছিল। তাই আর ভালো কিছু করা সম্ভব ছিল না।’
গোলরক্ষক নিপ্পনের ভুলের বিষয়ে বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘গোলরক্ষককে সবসময় সচেতন থাকতে হয়। টেম্পারমেন্ট এবং তার কাছে বল কতটা দ্রুত আসছে সেটা ধারাবাহিকভাবে ম্যাচের ভেতর থাকলে বোঝা যায়। যদি খেলার ভেতরেই না থাকেন এটা তো বড় সমস্যা।’
সাউথ কোরিয়ার বিপক্ষে নামার আগে গোবিনাথের ভাষ্য, ‘আমরা ভালো খেলে ফিরে আসতে চাই। আমাদের দেখতে হবে কীভাবে (ভারতের সঙ্গে) ভুলগুলো করেছি। ভিডিও অ্যানালিস্টের কাছ থেকে ভিডিওগুলো নিয়ে সকাল-বিকাল-রাত সেগুলো খেলোয়াড়দের দেখাব। যদি ভিডিও দেখে বিশ্লেষণ না করেন, কখনোই ভুলগুলো শোধরানো যাবে না।’