চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

নির্বাচনের আগে আমাদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে: ফখরুল

খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আন্দোলনের বিকল্প আর কিছু ভাবছে না বিএনপি। একইসঙ্গে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাইলে সরকারকে কিছু শর্ত পূরণ করতে বলেন বিএনপির নেতারা।

শুক্রবার নয়াপল্টনের সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন: আন্দোলন, আন্দোলন এবং আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেই আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে নেব।

মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন: আপনারা সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করবেন না। কারণ আপনারা জানেন, বিএনপি যদি নির্বাচন করে তাহলে আপনারা ২০টি আসনও পাবেন না। সেই জন্য আমাদের নেত্রী বেগম খালোদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখেছেন।

এসময় বিএনপি মহাসচিব নির্বাচনের জন্য কিছু শর্তারোপ করেন। তিনি বলেন: নির্বাচন করতে হলে আগে আমাদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এক নম্বর শর্ত হলো, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় কোনো নির্বাচন হবে না। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় সরকার দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে৷

‘এদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। আত্মীয়স্বজন কারাগারে গিয়ে তাকে দেখতে পারেননি। কারণ তিনি গেস্ট রুমেও আসতে পারছেন না। অথচ সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, আমরা নাকি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছি। রাজনীতি তো করছেন আপনারা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাকে বন্দী রেখেছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে, নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চান আপনারা। এরপর একটি সাজানো নির্বাচন করতে চান’, বলেন মির্জা ফখরুল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন: জনগণের উপর এই সরকারের কোনো আস্থা নাই। তাই তারা ২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের মতো আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। দেশের সকল স্তম্ভ ভেঙে দিয়েছে সরকার। বিচার বিভাগ, প্রশাসন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে তারা আবারও গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু তা হতে দেব না। যতোই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া এদেশের মানুষ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচন এবং গণতন্ত্র একসূত্রে গাঁথা।

তিনি বলেন: শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়া এবং সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা তুলে নিতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দিতে হবে এবং কিছুদিনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বক্তব্যের শুরুতে নেতাকর্মীদের বলেন: স্লোগানে কাজ হবে না। কাজ করতে হবে। রেডি থাকতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার দাবিতে এই সমাবেশ যোগ দিতে নয়াপল্টনে জমায়েত হয় দলটির নেতাকর্মীসহ বিপুল জনগণ। কাকরাইল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের ভীড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। জুমার নামাজের আগেই পল্টন ও আশেপাশের এলাকায় জড়ো হতে থাকে নেতাকর্মীরা। নামাজের পর পরই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে এসে নেতাকর্মী মঞ্চের সামনে আসন গ্রহণ করে।