চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাড়ি থেকে উচ্ছেদ: সিরাজুদ্দীন হোসেনের পরিবারকে কোন সরকার বাড়ি বরাদ্দ দেয়নি

যাদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ড , মুক্তিযুদ্ধের পর সেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের পরিবারও হয়রানির শিকার হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য রাষ্ট্রের দেয়া মাথা গোঁজার ঠাঁই থেকেও অনেককে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। একদিকে চলছিলো মুক্তিযুদ্ধ। অন্যদিকে মুক্তির এ সংগ্রামের সমর্থন পেতে কেউ ছুটেছেন পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে। কেউবা ধরেছেন কলম। এমনই একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন। ওই সময় অস্ত্রের চেয়ে কম চলেনি এ সাংবাদিকের কলম।

সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি বেতারে প্রচারের দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের নামে দৈনিক ইত্তেফাকে ছাপিয়ে দেন। সাংবাদিকতার প্রচলিত রীতি লঙ্ঘন করেই দেশের স্বাধীনতার স্বপ্নে তিনি এ কাজ করেছিলেন।

তিনিই প্রবাসী সরকারের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে আমেরিকান কনস্যুলেটের গোপন প্রতিবেদন মুজিবনগর সরকারের কাছে পাঠান। যা পরে বেতারে প্রচার হলে পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে ওঠে। একাত্তরের ১০ই ডিসেম্বর তাকে চামেলীবাগের ভাড়া বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনীর লোকেরা।

তারপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ১৯৭২ এ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে যেসব শহীদ পরিবারকে থাকার বাড়ি দিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম সিরাজুদ্দীন হোসেনের পরিবার।

সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে তৌহিদ রেজা নূর বলেন, বাবার মৃত্যুর খবর বঙ্গবন্ধু যখন শুনলেন তিনি ভীষণ রকম কষ্ট পান। সেসময় বঙ্গবন্ধু সরকার চেষ্টা করছিলেন যে সমস্ত পরিত্যাক্ত সম্পত্তি আছে সেখানে বিভিন্ন শহীদ পরিবারদের জায়গা দেবার জন্য। পরে ১৯ নম্বর নিউ ইস্কাটনে আমাদের একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়।

তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই চিত্র বদলে যায়। অন্যান্য শহীদ পরিবারের মতো সিরাজুদ্দীন হোসেনের পরিবারকেও বাড়ি খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়।

সেখানে নোটিশে বলা হয়েছিলো আমরা এখানে অবৈধভাবে দখল করে আছি বাড়িটি। জিয়ার আমলে এই ঘটনাটি শুরু হয়েছিল। এখান থেকে বোঝা কাজগুলো খুব নিখুত করে ভাবা হয়েছিল। এই চক্রটি খুব শক্ত ছিল। বস্তি উচ্ছেদ করলে যেভাবে ফেলে রাখা হয় সেভাবে আমাদের সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে রাখা হয়।

এরপর ৮ সন্তানকে নিয়ে সিরাজুদ্দীন স্ত্রী নূরজাহান সিরাজী একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। জীবন চালাতে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের বড় ছেলেকে এক সময় ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করতেও হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: