সারা শরীরে ঘা, জ্বালাপোড়া, পটাশিয়াম ও লবণ সংকট, হার্ট, কিডনিসহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ১৬ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল)-এ ভর্তি হয়েছিলেন সংগীতশিল্পী আকবর।
প্রায় ১৬ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর এ গায়ক বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাসায় ফিরেছেন। এবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আকবরকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানালেন তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা।
আকবরের স্ত্রী বুধবার বিকেলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বিকেলে আকবরকে নিয়ে তিনি মিরপুরের বাসায় ফিরেছেন। আকবরের স্ত্রী বলেন, তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো। তবে সম্পূর্ণ সুস্থ নয়।
তিনি বলেন, প্রথমে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতে না পারলেও এখন অল্পঅল্প হাঁটাচলা করতে পারছেন আকবর। তবে তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেজন্য আগামি সপ্তাহে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে কিডনিজনিত চিকিৎসার জন্য নেয়া হবে। ভিসা পাবো বৃহস্পতিবার। চেন্নাই চিকিৎসার জন্য আকবরের মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। সেই অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছি।
হাসপাতালে ভর্তির পর আকবরের শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হয়েছিল। খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সবসময় স্যালাইন দেয়া থাকতো। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আকবর শরীর জ্বালা পোড়ার জন্য অস্থিরতায় কাতরাতেন। স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা সার্বক্ষণিক দেখভাল করতেন।
আকবরের স্ত্রী বলেন, পিজি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরাও সবসময় আন্তরিকতা দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন।
‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে দেশ বিদেশে গায়ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল আকবর। আগে তিনি যশোরে রিকশা চালাতেন। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। টুকটাক গান করতেন। তবে গান নিয়ে ছোটবেলা থেকে হাতেখড়ি ছিল না। আকবরের ভরাট কণ্ঠের গানের কদর ছিল যশোর শহরে। সে কারণে স্টেজ শো হলে ডাক পেতেন।
২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। সেবার বাগেরহাটের এক ভদ্রলোক আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে।
এরপর ইত্যাদির টিম আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছরই ইত্যাদিতে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে, ফিরবে না সেতো আর কারও আকাশে’- কিশোর কুমারের এ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান। এরপর আকবরকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি গায়ক পরিচয়ে পরিচিতি পান। পরে আকবরের ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।