বছর দুয়েক আগে ফরাসি লিগের নিসে খেলা জন মিচেল সিরিকে যখন দলে নিতে চেয়েছিল বার্সেলোনা। তখন সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম ছিল, ‘জাভির খোঁজে আফ্রিকায় বার্সা’। সেন্টার মিডফিল্ড পজিশনে সৃষ্টিশীলতার কারণে আইভরি কোস্টের এ তারকার নামই হয়ে গেছে ‘আফ্রিকান জাভি’। যদিও শেষ পর্যন্ত বার্সায় আসা হয়নি সিরির।
এরপর ইনিয়েস্তা যখন বার্সেলোনা ছাড়লেন, তখন আরেক আফ্রিকান সাদিও মানের দিকে চোখ দিল কাতালানরা। দুজনের পজিশন একটু আলাদা হলেও এবার শিরোনাম হল ‘আফ্রিকান ইনিয়েস্তায় চোখ বার্সার’। সিরির মতো লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা সেনেগালের তারকারও শেষ পর্যন্ত কাতালান ক্লাবে আসা হয়নি।
তবে সিরি বা মানে বার্সায় না আসলেও সেখানে আফ্রিকান খেলোয়াড়দের খেলে যাওয়ার ইতিহাস কিন্তু কম নেই। ক্যামেরুনের স্যামুয়েল ইতো, আইভরি কোস্টের ইয়াইয়া তোরে, মালির সেইডু কেইটা, মৌরিতানিয়ার জেরার্দো মিরান্ডা থেকে শুরু করে সর্বশেষ ঘানার কেভিন প্রিন্স-বোয়াটেং। এ পর্যন্ত ১৩ জন আফ্রিকান বার্সার জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে ইতো বা তোরের পর কেউ আর সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি।
আবার অবশ্য বার্সাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এক ‘আফ্রিকান রত্ন’। নাম তার আনসু ফাতি। গিনি-বিসাউ’র এই টিনেজার আবার বার্সার ফার্ম হাউজ ‘লা মাসিয়ার’ সন্তান। তিনি অবশ্য বার্সার সাবেক কোনো গ্রেটের নামে প্রশংসিত হচ্ছেন না।
জন্মের ১০ বছর পরই গিনি-বিসাউ থেকে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান ফাতি। ২০১৩ সালে লা মাসিয়ায় পা রেখেই যুব স্তরে প্রতি মুহূর্তে কোচকে চমকে দিয়েছেন। যার কারণে তার নাম হয়ে গেছে, ‘লা মাসিয়ার রত্ন’। যাকে একটু বাড়িয়ে বললে বলা যায়, ‘লা মাসিয়ার আফ্রিকান রত্ন’।
ফাতি কিশোরদের ‘এ’ দলে ভিক্টর ভালদেসের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং এই প্রাক-মৌসুমেই বার্সেলোনার ‘বি’ দলে পদোন্নতি পেয়েছিলেন।
গত বুধবার বার্সেলোনার সিনিয়র দলের অনুশীলনের যোগ করা হয় ১৬ বছরের এই কিশোরকে। তিনি এখন স্বপ্ন দেখছেন ন্যু ক্যাম্পে অভিষেকের। ফাতি যেমন বিখ্যাত ন্যু ক্যাম্পে অভিষেকের স্বপ্ন দেখছেন, তেমনি বার্সাও তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।
তরুণ এই ফরোয়ার্ডকে দলের অনুশীলনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, কারণ কর্তৃপক্ষ মনে করেছিল তিনি সিনিয়র দলে আত্মপ্রকাশের কাছাকাছি চলে এসেছেন। যদিও এই মুহূর্তে ক্লাবের আক্রমণভাগের বিকল্প ছোট হয়ে (ইনজুরিতে মেসি, ডেম্বেলে, সুয়ারেজ) আসায় তার অভিষেকটা ধারণার চেয়ে আরও আগেই হয়ে যেতে পারে।