জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘আমরা প্রস্তুত দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে।’
“জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনে মৌলবাদীদের বাধা প্রদান ও ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে” বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধন থেকে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
সেসময় ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপশক্তির এই আক্রমণ আজকে নতুন না। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করার মাধ্যমে তারা মনে করেছিল যে, বাংলার বুক থেকে বঙ্গবন্ধু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি। কারণ, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানে একটি চেতনা, একটি আদর্শ। যেটি বাঙালি জাতির অন্তরে গেঁথে আছে। কোনোভাবেই তা মুছে দেওয়া যাবে না।’
মেয়র তাপস বলেন, ‘ভাস্কর্য ভেঙে তারা মনে করেছে তারা বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু তাদের বলতে চাই, যখনই সংবিধানবিরোধী কার্যক্রম হয়েছে, গণতন্ত্রকে আক্রমণ করা হয়েছে কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত এসেছে আমরা আমরা আইনজীবী অঙ্গন তার দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছি। এখনও আমরা প্রস্তুত দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য।’
ফজলে নূর তাপস আরো বলেন, ‘বাবুনগরী আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই সেই ৫ মের কথা। মনে করেছিলেন শাপলা চত্বর দখল করলেই বাংলাদেশ দখল হয়ে যাবে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যতদিন জীবিত আছি এই বাংলাদেশকে কেউ দখল করতে পারবে না। কোনো অপশক্তিই দখল করতে পারবে না।’
‘‘বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কূটক্তি, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের প্রতি আঘাত, স্বাধীনতার উপর আঘাত এই দামাল ছেলেরা বেঁচে থাকতে কোনোদিন বরদাস্ত করবে না। সুতরাং, আপনারা নিবৃত হবেন এবং এই দেশ একটি শান্তির নীড় হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে সেই কাতারে আপনারা আসবেন। আর তা না হলে আপনারা যে স্লোগান এক সময় দিয়েছিলেন যে, “বাংলা হবে আফগান” সেই আফগানিস্তানে আপনাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
মানববন্ধনে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জানি একাত্তরের পরাজিত শক্তিরাই পঁচাত্তরে চেষ্টা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে। তারা চেষ্টা করেছিল পৃথিবীর মানচিত্র থেকে বাংলাদেশকে মুছে দিতে। তারা সেদিন সফল হয় নাই। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সফল হয় নাই, আজকে তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিকে আঘাত করছে। তারা এই দেশকে ভালবাসে না। তারা এই দেশের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না। তাই তারা এসব অন্যায়-অপকর্ম করছে।’
‘‘তারা জানে বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। তারা আমাদের সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করছে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতির অবমাননা হলে সেটা হবে দেশদ্রোহীতার সামিল। তাই যারা এ ধরনের দেশদ্রোহীতা করবে, সম্পৃক্ত হবে তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। তাদের প্রত্যেককে আমরা বিচারের সম্মুখীন করব। তাদের বিচার হবেই হবে ইনশাল্লাহ।’’
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের সামনে বুধবার আয়োজিত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, আইনজীবী মোখলেসুর রহমান বাদল, বশির আহমেদ, মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী, নাহিদ সুলতানা যুথী, আজহারুল্লা ভূইয়া, সানজিদা খানম, শাহ মঞ্জুরুল হকসহ বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।