চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বান্দরবানে স্বেচ্ছা লকডাউনে ম্রো জনগোষ্ঠী

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যার যার ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে কাজ করে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। তখন নিজেদের এলাকা নিজেরা ‘লকডাউন’ রেখেছেন বান্দরবানের ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন। স্থানীয় ম্রো ভাষায় এর নাম ‘খাসুর’ করে রাখা।

এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠী। সেখানে তিনটি পাড়ার প্রবেশ মুখে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বাইরের কেউ এখন ঢুকতে পারবে না, আবার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পাড়ার কেউ বাইরে যেতে পারবে না।

ম্রো পাড়া বান্দরবান শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে।

ম্রো জনগোষ্ঠী ছাড়াও চিম্বুক পাহাড়ের রাংলাই, মধ্যম, সিংচ্যং, ম্রলং পাড়ার বাসিন্দারা নিজেদের লকডাউন করে রেখেছেন। এরপরই বিষয়টি দৃষ্টি কাড়ে সকলের।

দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের কথা শুনে গত ২৭ মার্চ পাড়ার লোকজন দীর্ঘদিনের প্রথা অনুযায়ী মহামারি থেকে বাঁচতে নিজেদের লকডাউন করে দেয়।

রাংলাই ম্রো পাড়ার বাসিন্দা পেলে ম্রো জানান: এই পাড়া লকডাউন প্রথা বহু আগে থেকেই ম্রো সমাজে প্রচলন ছিল এবং এখনো আছে। এর স্থানীয় নাম খাসুর। এটি দেয়া হলে বাইরের মানুষ পাড়ায় আসতে পারবে না, ভেতরের মানুষও বাইরে যেতে পারবে না। কেউ বাইরে গেলেও তাকে বাইরে অবস্থান করতে হবে, পাড়ার ভেতর আসতে পারবে না। যতদিন না এটি খোলা না হয়।

মধ্যমপাড়া বাসিন্দা ইয়ং য়েং ম্রো জানান: এই খাসুর বানিয়েছি আমরা তিন পাড়া সকলেই মিলে, যাতে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাই এবং পাড়াবাসীকে যাতে রক্ষা করতে পারি। যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বন্ধ রাখা হবে।

একই পাড়ার বাসিন্দা রেংটন ম্রো জানান: পাড়াবাসী যেহেতু অতি গরিব ও দিনমজুরি করে খায়। সেক্ষেত্রে সরকারের উচিত অসহায় এই পাড়াবাসীর দিকে নজর দেয়া। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও অন্তত দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা যাতে সরকার করে দেয়।

অন্যদিকে করোনা প্রতিরোধসহ বান্দরবান জেলায় খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম হোসেন।

তিনি বলেন: ৪৭ মেট্রিক টন চাল, তিন লক্ষ ৪০ হাজার টাকা প্রতিটি উপজেলায় ইউএনওদের মাধ্যমে দেয়া হবে। এর মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলায় ১০ টন চাল, ৭০ হাজার নগদ টাকা বিতরণ করা হবে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে। এটি শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মোতাবেক আমরা প্রতিটি অসহায় ও দুস্থ পরিাবরের মধ্যে পৌঁছে দেব, শুধু মানুষজন ঘরে থাকবে।