চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাজেট উপস্থাপনের দিন কী হয়েছিল অর্থমন্ত্রীর?

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের প্রত্যেকটা লাইন দাঁড়ি-কমাসহ নিজের হাতে তৈরি করলেও অসুস্থতার কারণে গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করতে পারেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কেন পারেননি তা সংসদে বাজেট পাসের দিন বিস্তারিত তুলে ধরেছেন তিনি।

রোববার আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১১তম বাজেট, যাকে ‘স্মার্ট’ বাজেট বলছে অর্থমন্ত্রণালয়; ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার এই বাজেট কণ্ঠভোটে পাস হয়।

গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকারের অনুমতিক্রমে সংক্ষেপে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

সেদিনের বর্ননা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৩ জুন ছিল আমার জীবনের পরম কষ্টের দিন। কারণ এর তিন দিন আগে আমি ডেঙ্গুজ্বরে ভয়ানকভাবে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং হাসপাতালে ভর্তি হই। এই অসুস্থতা নিয়েই আমি ১৩ জুন সংসদে আসি। আমার বিশ্বাস ছিল সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটটি উপস্থাপন করতে পারবো। কিন্তু যা ভেবেছিলাম, বাস্তবতা ছিল এর উল্টো। সংসদ শুরু হওয়ার আগে সংসদে প্রবেশ করি। তখন থেকে ৭ থেকে ৮ মিনিট আমি সম্পূর্ণরূপে অচেতন ছিলাম। সেসময়ে কোনো কিছুই মনে পড়ছিলো না।’

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো রকম আসনে বসছিলাম। মনে হয়েছিল পৃথিবীতে এক প্রবল ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আর সেই ভূমিকম্পের কারণেই আমি আসন থেকে ছিটকে পড়ে যাচ্ছি। তখন দোয়া করতে শুরু করলাম এবং মনে মনে ভাবলাম আমার আশপাশের কোনো না কোনো বন্ধু এসে আমাকে ধরে রাখবেন। যাতে আমি ছিটকে না পড়ি। যেন আহত না হই। এরপরই সবাই ছুটে আসলেন। আমাকে সহায়তা করলেন। সবার কাছে আমি ঋণী।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হই। তখন ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে কোনোমতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করি। কিন্তু হাতে ও আঙ্গুলে কোনো শক্তি ছিল না। বাজেটের পাতাগুলো উল্টাতে পারছিলাম না। তখন মতিয়া চৌধুরী প্রত্যেকটি পাতা উল্টিয়ে দেন। তখন আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। এরপর স্পীকারের অনুমতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করলে তিনি আন্তরিকতার সাথে বাজেট উপস্থাপন করেন। এটা সারাজীবন মনে রাখবো। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’

স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ১৩ জুনের পর থেকে আমি অধিকাংশ সময়ই হাসপাতালে ছিলাম। আদৌ বাইরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সংসদেও উপস্থিত হতে পারিনি। এখনও অসুস্থ।

মুস্তফা কামাল বলেন, এই বাজেটের প্রতিটা লাইন দাঁড়ি-কমাসহ আমার নিজের হাতে তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করেই এই বাজেট তৈরি করা হয়েছিল। ইচ্ছা ছিল সুন্দরভাবে বাজেট উপস্থাপন করবো। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তা পারিনি।