২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বলেছে: অনেকে এটাকে উচ্চাভিলাষী মনে করতে পারেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি। এই প্রত্যাশা পূরণে যত ঝুঁকি নিতে হয় জননেত্রী শেখ হাসিনা তা নেবেন।
শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে আওয়ামী লীগ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি দলের পক্ষে এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন: অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে আগের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার কাঙ্খিত ভীত রচনাই এবারের বাজেটের লক্ষ্য। এবারের বাজেট ভিন্ন বাস্তবতায়, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রণীত। এ বাজেট করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেওয়ার বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার দলিল। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে; সংকটকালীন ও সংকট পরবর্তী সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার গতিপথ নির্ণয়ের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রণীত হয়েছে এবারের বাজেট। যা জীবন-জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা সরকারের সময়োচিত সাহসী চিন্তার ফসল।
তিনি আরও বলেন: গতানুগতিক ধারার সাথে ‘আউট অব বক্স’ চিন্তার সমন্বয় করে সংকট জয়ের নবউদ্যম সৃষ্টিতে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসময় করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’ শীর্ষক যুগোপযোগী ও জনকল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।
ওবায়দুল কাদের বলেন: করোনার বিদ্যমান সংকটকে সম্ভাবনার রুপ দেওয়ার বাস্তবসম্মত প্রত্যাশার দলিল হচ্ছে এবারের বাজেট। জীবন-জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা সরকারের সময়োচিত সাহসী চিন্তার ফসল এবারের বাজেট।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের গবেষণা চলছে, তাই এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে আনার পরিকল্পনাও বাজেট প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ও লকডাউন জনিত সৃষ্ট দরিদ্র কর্মজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা সম্প্রসারণ করে এই খাতকে তৃতীয় অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবনের নিরাপত্তা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন: তার নেতৃত্বে সকল সংকট ও সমস্যা মোকাবেলা করে দেশ এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এসময় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন: বাজেট ঘোষণার সাথে সাথে কোনো ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ না করেই বিএনপিসহ কতিপয় মহল আগে-ভাগে প্রস্তুত করা ও মনগড়া, পুরনো ও গতানুগতিক গল্পের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে থাকে। বিএনপি নেতারা গত ১১টি বাজেট ঘোষণার পর বাজেট নিয়ে নানা ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন এবং বরাবরই বলেছেন বাজেট বাস্তবায়ন হবে না; অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে এ ধরনের বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
তিনি যোগ করেন: এবারও তারা সংকট জয়ের সুপরিকল্পিত কর্মদ্যোগ এই বাজেটের বিরুদ্ধে চিরায়ত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করেছিল আর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় শুধুমাত্র স্বাস্থ্যখাতেই ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। তাদের পক্ষে এই বাজেটের ব্যাপকতা ও সম্ভাবনা অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এটাই স্বাভাবিক।
এসময় শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।