শুধু করের হারের ব্যাপারে নয়, নতুন কর আইনের ব্যাপারেও নিজেদের প্রস্তাবনা জানিয়েছিলো ব্যবসায়ীরা। এবারের বাজেটে সেই জায়গায় না হলেও অন্যান্য জায়গায় কিছু উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। তবে এই প্রস্তাবিত বাজেটের পরেও তাদের প্রস্তাবনা নিয়ে আরো যাচাই হবে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এবারের বাজেটে সবচেয়ে আলোচিত ও কঠিন বিষয় ২০১২ সালে পাশ হওয়া নতুন ভ্যাট আইনের প্রয়োগ। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রথমেই বলবো যে, মূল্য সংযোজন কর বর্তমানে এক অভিন্ন হারে প্রয়োগ করা হবে। হারটি হবে ১৫ শতাংশ এবং এটি আগামী তিন বছর অপরিবর্তিত থাকবে। মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যবসায়ী সমাজের সুপারিশ অনুসারে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার স্বার্থে ভ্যাট অব্যাহতির সীমা তাদের অনুরোধ মোতাবেক বিদ্যমান ৩০ লক্ষ টাকা হতে বৃদ্ধিপূর্বক ৩৬ লক্ষ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করছি অর্থাৎ মাসে গড়ে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারধারী প্রতিষ্ঠানের কোন করই দিতে হবে না। এ ধরনের কোন সুবিধা ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইনে ছিল না। একইসাথে, ব্যবসায়ীদের চাহিদা মোতাবেক টার্নওভার করের সীমা বিদ্যমান ৮০ লক্ষ টাকা হতে বৃদ্ধিপূর্বক ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করছি অর্থাৎ যে সকল প্রতিষ্ঠানের মাসিক টার্নওভারের পরিমাণ গড়ে ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার নিচে তারা মাত্র ৪ শতাংশ হারে টার্নওভার কর পরিশোধের সুযোগ পাবেন।
এফবিসিআই সভাপতি শফিউল আহমেদ মহিউদ্দিন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা তো শুধু রেটটার ব্যাপারে প্রস্তাব দেইনি দেইনি। আমরা নতুন আইনটার ব্যাপারে মতামত দিয়েছি। লোকাল শিল্পের সুরক্ষার জন্য সাপ্লিমেন্টারি ডিউটির ব্যাপারে সেটা তারা রেখেছেন, সেজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। আবার ভ্যাট অব্যাহতির ৩০ লাখ টাকা থেকে ৩৬ লাখ টাকা করেছেন সেটা আমরা ৫০ লাখ চেয়েছি।
টার্নওভার ট্যাক্সটা আমরা ৫ কোটি চেয়েছি যেটা ৮০ লাখ থেকে ১.৫০ কোটি করা হয়েছে। এবং রেটটা ৪ পারসেন্টের জায়গায় ৩ পারসেন্ট চেয়েছি। এ ধরনের কিছু বিষয় রয়েছে। আবার যেমন কিছু অ্যাডভান্সড রেট ভ্যাট জিরোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন চিনি, চাল, ডাল, তেল সেটা প্রশংসনীয়। এসেন্সিয়াল ড্রাগ থেকে শুরু করে আরো প্রায় ২০০ পণ্য ভ্যাটমুক্ত করা হয়েছে সেটা ভালো উদ্যোগ।
আমরা মনে করি, কর আদায়ে বিশেষ করে ছোট ব্যবসায়ীদের আরো খানিকটা সময় দেওয়া যেন সেসব ইমপ্লিমেন্টেশনে সুবিধা হয় যেন তারা মনে না করে যে তারা হ্যারাসড হচ্ছে। সেটা সহজীকরণ করার জন্য এখন আমরা বলছি। নির্মাণ শ্রমিকের রেয়াত নেওয়া, ইট ভাটায় মাটির মূল্য সেসব যেন আবার নন ফুড আইটেমে মুদ্রাস্ফীতির না সৃষ্টি করে সেটা দেখতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, যদি করহার ১৫ শতাংশ করা হয় এবং কোনো অল্টারনেটিভ সুবিধা না দেওয়া হয় তাহলে তো আমার মনে হয় না যে সেটা ঠিক হবে। তবে আামি মনে করি যে যে বাজেটটটা দিয়েছেন, যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাও অনেক দিনের আলোচনা, এটা তো এখন প্রস্তাবনা এর পরে আলাপ আলোচনা হবে। তারপরে পাস হবে। দেশের ক্ষতি হবে এমন কিছু হলে সেটা অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী ঠিক করে দিবে বলে আমার বিশ্বাস। দেশের ক্ষতি যেমন আমরা চাইনা তেমন সরকারও নিশ্চয়ই চান না। আমি মনে করি সরকার ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হোক এমন কিছু নিশ্চয়ই তারা করবেন না।