বৃহস্পতিবার মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি (৯৩)। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে গত নয় সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাজপেয়ি।
ভারতের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি সম্পর্কে ১৫টি বিশেষ তথ্য তুলে ধরেছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া। যা সবার জানা উচিত বলেও জানিয়েছে তারা।
১. ১৯২৪ সালের ডিসেম্বরে মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়রে জন্ম গ্রহণ করেন অটল বিহারি বাজপেয়ি।
২. বৃটিশ উপনিবেশিক শাসনের বিরোধিতা করায় তরুণ বয়সেই তাকে অল্পদিনের জন্য জেলে ভরা হয়।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) ও জন সংঘ সমর্থনের আগে সাম্যবাদের সঙ্গেও কিছুদিন তার সখ্যতা ছিল।
৩. ১৯৫০ সালের শুরুর দিকে আরএসএস’র একটি ম্যাগাজিন চালানোর জন্য আইনের স্কুল থেকে তাকে বের করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিজেপির মুখ্য কন্ঠস্বর হওয়ার জন্য আরএসএস’র সঙ্গে রাজনৈতিক শেকড় পোতেন তিনি।
৪. তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৪২-৪৫ সালে ভারত ছাড় আন্দোলনে (Quit India Movement) একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। একজন কমিউনিস্ট হিসেবে শুরু করে পরে আরএসএস’র সদস্য হন তিনি।
৫. বাজপেয়ি এরপর ভারতীয় জনতা সংঘের(বিজেএস) প্রতিষ্ঠাতা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জির ঘনিষ্ট অনুসারী ও সহায়তাকারী হন।
৬. ১৯৫৩ সালে শ্যামা প্রসাদ মুখার্জির অকাল মৃত্যুর সময় তার পক্ষেই ছিলেন বাজপেয়ি। ভারতের নাগরিকদের কাশ্মীরে প্রবেশে অনমুতির নিয়মের বিরোধীতা করেন শ্যামা প্রসাদ। দক্ষিণপন্থী প্রজা পরিষদ গঠন করে “এক প্রজাতন্ত্রের মধ্যে আরেকটা প্রজাতন্ত্র থাকতে পারে না” এই দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তিনি। এরপর শ্যামাপ্রসাদকে গ্রেপ্তার করে জেলবন্দি করা হয়। বন্দি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। শ্যামা প্রসাদের মৃত্যু ও এসব ঘটনা বাজপেয়ির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল।
৭. শ্যামা প্রসাদের কাছ থেকে দীক্ষা নিয়ে ১৯৫৭ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনেই জয়লাভ করেন বাজপেয়ি।
৮. ১৯৫৭ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত একটানা ১০ মেয়াদে নির্বাচিত হন তিনি।
৯. কংগ্রেসের বাইরে বাজপেয়িই প্রথম সরকার প্রধান যিনি পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করেন।
১০. চার দশক বিরোধী দলে থাকার পর ১৯৯৬ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। তবে সংখ্যা গরিষ্টতার অভাবে মাত্র ১৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তের মাস আবার ক্ষমতা পান তিনি।
১১. কারগিল যুদ্ধে সফলতার কারণে ১৯৯৯ সালে আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। এবার পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১২. সফল বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোরাজি দেশাইয়ের শাসনামলে বিদেশ মন্ত্রী হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেন বাজপেয়ি। জাতিসংঘে হিন্দিতে দেয়া তার ভাষণ আজও অনন্য হয়ে আছে।
১৩. ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান সফর করেন তিনি। এই সফরের জন্য সমালোচিতও হয়েছিলেন তিনি।
১৪. ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘‘ভারত রত্ন” লাভ করেন তিনি।
১৫. শুধু সফল রাজনীতিবিদই নন, একজন কবিও ছিলেন এই ব্যাচেলর রাজনীতিবিদ। প্রায়সই নিজ দলের নেতাকর্মীদের মুখে উচ্চারিত হয় তার নাম।