ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে অরণী ও আলভীকে তাদের মা হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব। উত্তরায় র্যাবের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
ওই দুই শিশুর মা মাহফুজা মালেক জেসমিন র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আগে থেকেই র্যাবের অনুমান ছিলো বনশ্রীতে ওই দুই শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা, নিকট আত্মীয় কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
তবে বাবা অথবা মা হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারেন, সেটি প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইছিলো না এলিট ফোর্স।
প্রথমে পরিবারের পক্ষ থেকে খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে দু’জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিষক্রিয়ার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। বলা হয়, শ্বাসরোধে শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের জন্য পারিপার্শ্বিক সব বিষয়কেই বিবেচনায় এনে তদন্তের এক পর্যায়ে দুই শিশুর বাবা-মা এবং খালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামালপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় বলে জানান র্যাব মুখপাত্র।
‘এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়, এখানে অন্য কোনো আত্মীয়ের সম্পৃক্ততা না-ও থাকতে পারে। তাই তাদেরকে খুব কৌশলে ও সাবধানতা অবলম্বন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়,’ বলে জানান তিনি।
ওই জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মা মাহফুজা মালেক হত্যার দায় স্বীকার করেন বলে জানায় র্যাব। আরো জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের পুরো বর্ণনাও দেন তিনি। বলেন, ছেলেমেয়ের পড়ালেখা এবং ক্যারিয়ার নিয়ে সবসময়ই খুব বেশি দুশ্চিন্তায় থাকতেন মাহফুজা।
র্যাব জানায়, ওই দুশ্চিন্তা থেকেই মানসিক অবসাদের কারণে ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিজ বাসায় শ্বাসরোধ করে মেয়ে অরণী ও ছেলে আলভীকে নিজেই হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেন মা।
তবে স্বীকারোক্তি দেয়ার সময় পুরোপুরি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় জেসমিন কথা বলছিলেন বলে দাবি র্যাবের।
জেসমিন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে মাস্টার্স করেছেন। দু’বছর একটি কলেজে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।