বাঙালি পোশাক ও সংস্কৃতি নিয়ে হীনমন্যতা দূর করতে ঐতিহ্যবাহী পোশাক লুঙ্গির গ্রহণযোগ্যতা সকলের নিকট তুলে ধরতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো ‘লুঙ্গি মাহফেল’। লুঙ্গি মাহফেলে যোগ দিতে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসিতে) এসে জড়ো হন বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ‘শ’ খানেক শিক্ষার্থী। এরপর শিক্ষার্থীরা লুঙ্গি পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন এবং অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মিলিত হন। পরে ‘মাহফেল’-এ অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই লুঙ্গি পরে ক্লাসে উপস্থিত হন বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠানটির আয়োজকদের মধ্যে নেহাল মুহাম্মদ চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যেমন জ্ঞানগত উৎকর্ষের জায়গা, একই সাথে কালচার বা সমাজের সংস্কৃতিও বিশ্ববিদ্যালয়-ই তৈরি করে। কিন্তু এই সময়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানগত জায়গায় নয়া অবদান যেমন থোড়াই রাখতে পারছে। একইভাবে কালচারের জায়গাতেও এটা একমুখী কিছু ধ্যান-ধারণায় আবদ্ধ থাকছে। আমরা সেটাকে ঔপনিবেশিকতার টার্মে ব্যবহার করতে পারি। এরা সংস্কৃতিরে একটা নির্দিষ্ট চশমায় দেইখা আরাম পায়। তাঁদের চশমার আনুকূল্য না পাইলেই সেটা ব্রাত্য হয়ে ওঠে।এবং”ক্ষ্যাত” আখ্যা পায়। তো, আমরা কয়েকজন চেয়েছি, এই আরামের জায়গাটা ভেঙ্গে দিতে। আর এ আরামটা ভেঙ্গে গেলেই দেখবেন মানুষ ক্রমশ সহনশীল হয়ে উঠবে। কারণ, ওই যে, সে তখন মানতে শেখবে “আমি-ই ধ্রুব নই”।
আর এই জন্যেই আমাদের আয়োজন ছিল লুঙ্গি মহফেলের, আমি তারিক আর নাসিম মূলত আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়ছি। ‘আমাদের প্ল্যান ছিল, আমরা তথাকথিত “ক্ষ্যাত” পোশাক লুঙ্গি পরে ক্যাম্পাসে আসব, ক্লাস করব। উদ্দেশ্য, এই বিদ্যমান কালচারকে বিব্রত করা। আমরা তা ভালোভাবেই পেরেছি।’ মাহফেলে অংশ নেওয়া কারও গায়ে পাঞ্জাবি, কারও শার্ট থাকলেও পাজামা বা প্যান্টের বদলে সবার পরনেই ছিল লুঙ্গি।