আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। বাঘ না থাকলে সুন্দরবনও রক্ষা পাবেনা-এ আশংকা করে বাঘের পাশাপাশি হরিণের চামড়া পাচাররোধে আরো কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাঘ রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছেন তারা।
এবারের বাঘ দিবসের স্লোগান ‘বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে’। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রধান আবাসস্থল সুন্দরবন হলেও এদেরকে রক্ষায় যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় বাঘের মৃত্যু আশংকাজনকহারে বেড়েই চলেছে। গত সাড়ে তিন দশকে সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় চোরা শিকারী ও বনদস্যুদের হানা, গনপিটুনি আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৬৭টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। বাঘ সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপদ প্রজনন পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হলে অচিরেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা বিশেষজ্ঞদের।
বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতিকে খুব ভয়ংকর উল্লেখ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাদাত বলেন, বাঘের আবাস রাখতে হলে হরিণের দিকেও নজর রাখতে হবে। আমরা বাঘ শিকার নিয়ে যতটা উদ্বিগ্ন আমাদের হরিণ শিকার নিয়ে আরও বেশি উদ্বগ্ন হতে হবে।
পর্যটক ও চোরাশিকারিদের আনাগোনায় বাঘের স্বাভাবিক আবাসস্থল ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটেড সুন্দরবন রিসার্স সেন্টারের পরিচালক সরদার সফিকুল ইসলাম বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে বলে জানান।
তবে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি ও যথাযথ সংরক্ষণে সর্বশেষ পরিসংখ্যানকে ভিত্তি ধরে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা।
খুলনার বন্যপ্রানী সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল কবির বলেন, সবার জন্য আমাদের বাঘের সংখ্যাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
বাঘ থাকলে সুন্দরবন টিকবে উল্লেখ করে বাঘ কমে গেলে সুন্দরবন হুমকির সম্মুখিন হবে বলে মন্তব্য করেন খুলনার বন সংরক্ষক সুনীল চন্দ্র কুন্ডু।
বাঘসহ সুন্দরবনের সকল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন বিভাগের পাশাপাশি নিজেদের প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছে পুলিশ। খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে। সেখানে তাদের পাশে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বা আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোড়দাড় করার জন্য যতটুকু সহযোগিতা দরকার আমরা করছি।