বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাথায় অনেকটা জুড়েই থাকবে চীন। জুন মাসের ৬-৭ তারিখ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করবেন মোদি। সফরে সীমান্ত চুক্তি, তিস্তার পানি বণ্টন, ভিসা সহজ করা আর অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো থাকলেও চীনও কম থাকবে না বলে ভারতীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে তারা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়াকে চীনের প্রভাবমুক্ত রাখতেই সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত এবং পানি সমস্যার সমাধানে বেশি আগ্রহী মোদি। আর বাংলাদেশ যে সামরিক যন্ত্রপাতির জন্য বেইজিংয়ের উপর অনেকটা নির্ভরশীল, সেটাও তার ভাবনার বিষয়।
ভারতের চিন্তার মূল বিষয়টি হলো, চীনের সাথে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক। চীন এখন বাংলাদেশের কাছে দুটি ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন বিক্রির পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের হিসাব মতে, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অস্ত্র কেনার ৮২ ভাগই হয়েছে চীনের কাছ থেকে। আর এই সময়ে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে চীনের অস্ত্র ক্রেতার সেরা তিনের এক। এছাড়া এন্টিশিপ মিশাইল, ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য অস্ত্রও চীনের কাছ থেকে কিনেছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, আপাত: বন্ধুতার মধ্যেও চীনের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটা শীতলতা আছে। এর কারণ ইসলামবাদকে বেইজিং-এর সামরিক সহায়তা।
দিল্লীর জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি (জেএনইউ)’র চীন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্ত কন্ডাপাল্লি বলেন, ‘চীন তার দক্ষিণ এশীয় কূটনীতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশের সাথে বেশ গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। আর সেজন্যই বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে ভারত সরকার।’
ভারত মহাসাগরে বন্দর উন্নয়ন এবং বন্দরভিত্তিক আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তুলতে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে চীনের ‘মুক্তোর মালা কূটনীতি’ নিয়েও চিন্তিত ভারত।
বাংলাদেশের কাছে তাই বন্ধুত্বের আরো বেশি প্রমাণ দিতে মোদি তার নিজের আগ্রহে এরইমধ্যে সীমান্ত চুক্তিতে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিশ্চিত করেছেন।
নরেন্দ্র মোদির সফরের সঙ্গে সম্পৃক্ত সাউথ ব্লকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সমস্যা সমাধানে মোদির আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেছেন, ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে অনেক আগেই এ সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত ছিলো।