চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ফুটবলের পুনর্জন্মের অপেক্ষা

সোমবার রাত সাড়ে দশটা। গুলিস্তান পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দিকে তাকাতেই একটা আলো চোখে পড়ল। কিছু সময়ের জন্য মনে হল কারো জন্ম উৎসব বুঝি। পরে বোঝা গেল এটি সাউথ এশিয়ার বিশ্বকাপ অর্থাৎ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি পর্ব।

উৎসবের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ভেন্যু। বাংলাদেশের ফুটবলাররা কতটুকু প্রস্তুত সেটি বুঝতে হলে প্রথম ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেই সঙ্গে অপেক্ষায় থাকছে গোটা দেশ ফুটবলের একটা নতুন জাগরণের জন্য। গত কয়েক বছরে যা ঝিমিয়ে পড়েছে। এক কথায় মৃতপ্রায়।

উদ্বোধনী দিনে দুটি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ নেপাল, বিকেল চারটায়। দ্বিতীয় ম্যাচ সন্ধ্যা সাতটায়, বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভুটান।

বাংলাদেশের ফুটবল ঝিমিয়ে পড়ে গত বছর অক্টোবরে। এশিয়া কাপের বাছাইয়ে ওঠার প্লে-অফে ভুটানের বিপক্ষে হারের পর ‘হতাশ’ বাফুফে আর দল গুছিয়ে উঠতে পারেনি। সব দোষ খেলোয়াড়দের ঘাড়ে চাপিয়ে জাতীয় দলের প্রায় সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়! ওই ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর লাওসের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে একটি দল গঠন করা হয়। এরপর এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয়ের পর কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরেছে দেশের ফুটবলে।

আবার সামনে যখন সেই ভুটান, তখন আশা-শঙ্কা দুটিই থাকছে। এবার ফলাফল ভালো না হলে দেশের ফুটবল ঘিরে আরেক দফায় নেমে আসতে পারে অন্ধকার।

সাফ ফুটবলে ভারত বলতে গেলে এক তরফা ফেভারিট। আগের ১১ বারের মধ্যে সাতবার শিরোপা জিতেছে তারা। শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান জিতেছে একবার করে। বাংলাদেশ সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০৩ সালে।

ফুটবলে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্য খুব একটা ভালো না হলেও একটা পরিসংখ্যান আশার আলো দেখাচ্ছে। নিজেদের মাঠে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাংলাদেশ অতীতে ভালোই করেছে। ২০০৩ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৯ সালে সেমিফাইনালে উঠেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

৯ বছরের ব্যবধানে তৃতীয় আসর হচ্ছে ঢাকায়। অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে পাঁচটি দলের বিদেশি কোচ আছে। বাংলাদেশ তাদের মধ্যে একটি। অন্য চারটি দেশ ভারত, ভুটান, পাকিস্তান এবং মালদ্বীপ। শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের দায়িত্বে থাকছেন তাদের দুজন দেশি কোচ।

বিশ্বকাপের মতো এই সাফের বড় কৃতিত্ব তারকা তকমা ছড়িয়ে দেওয়াতে। ভারতীয় ফুটবলার সুনীল ছেত্রী এবং মালদ্বীপের আলী আশফাক এই সাফে খেলেই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। এই আসরে তারা খেলছেন না। অন্যদের সামনে সুযোগ আলো ছড়িয়ে আলোকিত হওয়ার।