দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ৬৫তম দিনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা এ যাবত কালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন। সবমিলিয়ে আক্রান্ত এখন পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৬৯১ জন। আর মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে থেকে মোট সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯০২ জন।
সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।
গত কয়েকদিন ধরে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরইমধ্যে দেশে ঢিলেঢালা হয়েছে জনগণের চলাচল এবং রমজান মাস ও ঈদ উপলক্ষে সীমিত আকারে খোলা হয়েছে। সামনের দিনগুলিতে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে আরও অনেককিছু স্বাভাবিক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে একটি উভয়সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে দেশ।
করোনার গতি প্রকৃতি নির্ধারণে বিভিন্ন দেশের গবেষক ও চিকিৎসকরা আক্রান্তের গ্রাফ বিশ্লেষণ করছে। করোনা মোকাবিলায় নেয়া নানা পদক্ষেপ ও আক্রান্তের গ্রাফ দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি কমছে না বাড়ছে। লকডাউন তুলে দেয়া থেকে শুরু করে পরিস্থিতি আরো কঠোর করা হচ্ছে সেসব দেখেই। এসবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কোন পরিস্থিতিতে আছে? আমরা কি আক্রান্তের শীর্ষ চূড়ায় আসতে পেরেছি, যেখান থেকে ক্রমেই উন্নতি হবে পরিস্থিতি? নাকি কেবলমাত্র বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা খুবই জরুরি।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, দেশে আন্ত:জেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত বন্ধ হয়নি। গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ প্রায় নিয়মিতই আসছে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলও করোনার মৃত্যুতে ছাড়িয়ে আছে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর, রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে আটকে থাকা মানুষজন তাদের নিজ নিজ জেলায়/গ্রামে যাবার চেষ্টা করবে সেসময়ে। যা করোনার সামাজিক সংক্রমণের আরেক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আমাদের ধারণা। এতোদিনের কাড়কড়ি আর সতর্কতা সবই একাকার হয়ে যাবে বলেও শঙ্কা আমাদের।
এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্তের শীর্ষ চূড়া চিহ্নিত করাসহ দ্রুত সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে আমরা মনে করি। না হলে হয়তো বিশ্বের বিভিন্ন করোনা বিপর্যস্থ দেশগুলোর পরিণতি আমাদের বরণ করতে হতে পারে।