বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রশংসা করে নেদারল্যান্ডসের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লিয়নি কিউলিনিয়ার বলেছেন, এদেশের পোশাক বিশ্বসেরা। এখানকার শ্রমিকরাও অনেক পরিশ্রমী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে তার বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ৩ বছর আগে লিয়নি কিউলিনিয়ার নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশে। তার সম্মানার্থে এই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজিএমইএ।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এখন অগ্রাধিকারমূলক বিশেষায়িত বাজার সুবিধা ‘জিএসপি প্লাস’ এর আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধা দিতে ইইউ দেশগুলো কী চায় তা জানতে হবে। এজন্য এখন থেকেই কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের কারখানাগুলোর অনেক সংস্কার হয়েছে। ফলে কর্মপরিবেশের মানোন্নয়ন হয়েছে। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল জরিপে সারাবিশ্বে যে ১০টি সেরা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি’বা সবুজ কারখানা নির্বাচন করেছে তার ৭টির অবস্থান বাংলাদেশে। এদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ইইউসহ নেদারল্যান্ডস সবসময় বাংলাদেশের পোশাক খাতকে উন্নয়নে সহযোগিতা করে আসছে। আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় বিদায়ী রাষ্ট্রদূত লিয়নির প্রশংসা করে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে হলি আর্টিসান হামলার পর সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে সারা বিশ্বের পর্যটকরা বাংলাদেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকে। সেই কঠিন সময়ে নেদারল্যান্ডসের এই রাষ্ট্রদূত আমাদের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাসীদের দেশ নয়, এ দেশের কোথাও সন্ত্রাসীদের স্থান নেই।
লিয়নিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘৩ বছর আগে আপনি নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হিসেবে এদেশে এসেছিলেন। এবং ৩ বছর পরে ফিরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে। আপনি দেখেছেন, কিভাবে গত ৫ বছরে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এদেশের পোশাক শিল্প এখন বিশ্বে সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বচ্ছ শিল্পখাত। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে এখনও এ শিল্পকে নিয়ে কিছু ভুল ধারনা রয়েছে। আশা করি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আপনি এদেশের শিল্প ও দেশের বিষয়ে সত্যিকারের তথ্য তুলে ধরতে সর্বোচ্চ প্রয়াস গ্রহণ করবেন।
‘আরেকটি চ্যালেঞ্জ আমরা আগামী বছরগুলোতে মোকাবেলা করতে চলেছি। সেটি হচ্ছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তোরণ এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা গ্রহণের জন্য তৈরি হওয়া। আমরা আশা করি, আপনি এক্ষেত্রে আপনার মূল্যবান পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা প্রদান অব্যাহত রাখবেন।’
বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।