বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে ০-৪ গোলের পরাজয় দেখেছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্ট্রাইকারদের গোল মিসের মহড়ার দিনে, জর্ডানের পক্ষে দুইটি গোল করেন আব্দুল্লাহ দিব। একটি করে গোল করেন আবু আমারা ও ইয়াসিন বাকিত।
হোম গ্রাউন্ডের বাড়তি সুবিধার আশা থাকলেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি এমিলি-মামুনুলরা। ম্যাচ শুরুর আগে অধিনায়ক মামুনুল ও বাংলাদেশ দলের কোচ ডি-ক্রুইফ আক্রমণাত্বক ফুটবলের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও তার খুব একটা প্রতিফলন পাওয়া যায়নি পরিকল্পনায়।
মামুনুলকে এদিন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকায় দেখা যায়। ক্রুইফ ৫-৪-১ ফরমেটে এমিলিকে সামনে রেখে রণসজ্জা সাজান। ৫ জন ডিফেন্ডার রেখেও খুব একটা সুফল পাননি ক্রুইফ। উল্টো ৯০ মিনিটের নির্ধারিত সময়ে ৪ গোল হজম করতে হয়।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯১ আর ১৭৩। তাই দুই দলের মধ্যে শক্তির পার্থক্যটা আগেই জানা ছিলো। শুরু থেকেই শক্তির পার্থক্যটা বুঝাতে থাকে এশিয়ার পাওয়ার হাউজ জর্ডান। সেই ধারাবাহিকতায় ১২ মিনিটে সরফরকারিদের পক্ষে প্রথম গোলটি তুলে নেন আব্দুল্লাহ দিব।
নিজেদের ডি বক্সের ভেতর থেকে মিশু হাতে বল লাগালে পেনাল্টি পায় জর্ডান। রাসেল মাহমুদ বলের লাইনে থাকলেও দিবের জোরালো শট ঠেকাতে ব্যর্থ হন তিনি।
১৮ মিনিটে সমতায় আসতে পারতো বাংলাদেশ। ম্যাচে প্রথম বারের মতো কর্ণার পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দলের পক্ষে কর্ণার নেন অধিনায়ক মামুনুল। টাইগার দলপতির শট ইয়াসিনের মাথা খুঁজে পেলেও বার পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বল বাইরে চলে যায়।
এবার একক প্রচেষ্টায় দলকে সমতায় ফেরাতে জামাল ভূঁইয়ার চেষ্টা। ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে তার নেওয়া শট দারুণ দক্ষতায় লুফে নেন নাসামা গোল রক্ষক আহম্মেদ শাফি।
প্রথমার্ধের পুরোটা সময় জুড়ে দুর্দান্ত খেলা জামাল ভূঁইয়া জর্ডানের ডিফেন্ডার দিমেরির ভুলে জর্ডান ডি বক্সের ভেতর থেকে বল পান তিনি। তবে তার বাড়িয়ে বল পায়ে নিতে ব্যর্থ এমিলি। ডি-বক্সের ভেতর তিনি পড়ে গেলে সমতায় ফিরতে ব্যর্থ লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সমতায় ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ উল্টো ৩২ মিনিটে আরেকটি গোল হজম করে বসে। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে আবু আমারা জোরালো শটে রাশেল মাহমুদকে পরাস্ত করেন। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় জর্ডান।
৩৬ মিনিটে আবারও অ্যাটাকে বাংলাদেশ। তবে জুয়েল রানার এবারের প্রচেষ্টা জর্ডান ডিফেন্সে বাধা প্রাপ্ত হয়। ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। তবে এ যাত্রায় মামুনুলের দুর্বল শট সহজেই লুফে নেন জর্ডান গোল রক্ষক।
প্রথমার্ধের শেষ হওয়ার মাত্র ২ মিনিট আগে গোলের সব থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। জুয়েল রানার শট জর্ডান গোল রক্ষক ঠেকাতে ব্যর্থ হলেও জালের দেখা পায়নি বল। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে ০-২ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি শেষে মাঠে ফিরে আরও আক্রমণাত্বক ফুটবল খেলতে শুরু করে নাসামা বাহিনী। এরফল মাত্র ৩ মিনিটের ব্যবধানেই আরো দুই গোল।
৫৬ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতরে প্রথম গোল করা আব্দুল্লাহ দিবকে বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা মার্কিং করতে ব্যর্থ হলে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন তিনি। এর ৩ মিনিট পর আবারো স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে সফরকারিদের পক্ষে গোল আদায় করে নেন ইয়াসিন বাকিত।
৭৭ মিনিটে গোল রক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন কমল। ৮১ মিনিটে আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন এমিলি। ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে কমল এমিলির দিকে বল বাড়ালেও তা এমিলির পায়ে জড়িয়ে যায়। এতে শুধু কর্ণারেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
শেষ পর্যন্ত ০-৪ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।