কৃত্রিম যেকোনো কিছুর সাহায্য নিয়ে বলের সাধারণ অবস্থার পরিবর্তন করাকে বল টেম্পারিং বলে। বলের কোন অংশ বেশি চকচক কিংবা বেশি রুক্ষ করতে পারলে পেসাররা সুইংয়ে সাহায্য পান। বিশেষ করে রিভার্স সুইংয়ে।
কত দূর পর্যন্ত এবং কী কী উপায়ে বল বেশি চকচক করা যাবে আইসিসি থেকে তার একটি মাত্রা ঠিক করা আছে। কিন্তু কোনোভাবেই বলের একদিক নষ্ট করা যাবে না। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় কাজটি করতে গিয়েই বিপাকে পড়েছে।
আইসিসির নিয়মে বলা আছে, কোনো ক্রিকেটার মাঠে বসে মুখের থুথু কিংবা ট্রাউজার দিয়ে বল ঘষে চকচক করতে পারবেন। তবে কোনো অবস্থাতেই ওভার শেষ হওয়ার পর এই কাজ করতে পারবেন না। নতুন ওভার চলাকালীন তিনি করতে পারবেন। তাই ওভার শেষ হলে কিংবা খেলা কোনো কারণে বন্ধ থাকলে আম্পায়ার ফিল্ডারদের কাছ থেকে বল নিয়ে নেন।
সাধারণ সুইং বনাম রিভার্স সুইং এবং টেম্পারিংয়ের প্রভাব
বোলার ডেলিভারি দেয়ার পর বাতাস কেটে বল যাওয়ার সময় বায়ুর পাতলা স্তর বলকে ঘিরে ধরে। বলের অপ্রতিসমতার কারণে এক পাশের তুলনায় অপর পাশের বায়ুস্তর আগে সরে যায়। যে পাশে বাতাসের চাপ বেশি থাকে বল সেদিকেই বাঁক নেয়। সাধারণ সুইংয়ের জন্য বোলার যখন বলের সেলাই অংশটি স্লিপের দিকে হেলিয়ে রাখেন তখন আউট সুইং আর যখন ফাইন লেগের দিকে হেলিয়ে রাখেন তখন ইনসুইং হয়।
রিভার্স সুইং
পুরনো বলের একদিক উজ্জ্বল রাখতে পারলে আর আরেক দিক রুক্ষ করতে পারলে কিংবা রুক্ষ হয়ে গেলে শুরু হয় রিভার্স সুইংয়ের খেলা। উজ্জ্বল এবং মসৃণ অংশ বাতাসে সহজে কাটে। অন্যদিকে রুক্ষ অংশের ওপর চাপ পড়ে। গ্রিপ করার সময় রুক্ষ অংশ যেদিকে থাকে সুইংটাও সেদিকে হয়।
ব্যাটসম্যানকে আড়াল করে পেসার বল ধরলে তার কিছু বোঝার উপায় থাকে না। অনেক সময় যেদিকে ধারণা করা হয়, তার উল্টো দিকে সুইং হয়।
বলের একদিক উজ্জ্বল রাখতে ১৯৯৪ সালে পকেটে বালি রেখে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন আথারটন। পকেট থেকে বালি নিয়ে বলে ঘষেছিলেন। টিভি ক্যামেরাতে ধরা পড়ে সেই ঘটনা।
বলের একদিক রুক্ষ করতে সম্প্রতি বিশেষ ধরণের কাগজ পকেটে নিয়ে মাঠে নামেন অস্ট্রেলিয়ার বেনক্রফট। বলের চকচকে ভাব নষ্ট করার আরও অনেক উপায় নানা সময়ে দেখে গেছে। যেমন বল ছোড়ার বদলে গড়িয়ে মারা, বোলিংয়ের সময় হাত মোছার ছলে বালিতে ঘষে সেই বালি বলে ঘষা, পকেটে বোতলের ছিপি রেখে তার ওপর ঘষা।
উজ্জ্বল আর রুক্ষ করার পরিবর্তে আরেক উপায়ে বল টেম্পারিং করা হয়। বল সিমে হিট করালে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লাফায়। এই সিম বলতে বলের সেলাই বা জোড়া লাগানো অংশকে বোঝায়। কোনোভাবে সেলাইয়ের অংশ নষ্ট করা গেলে বল উল্টা-পাল্টা আচরণ করে। শহীদ আফ্রিদি একবার মুখ দিয়ে কামড়ে বল নষ্ট করতে চেয়েছিলেন!