গত মার্চে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পরপরই খবর বের হয় বরখাস্ত হতে পারেন শ্রীলঙ্কান কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে। সে যাত্রায় না হলেও বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের পর আবারও খবর, এবার বরখাস্ত হতে পারেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ। যদিও হাথুরু নিজে জানিয়েছেন, দায়িত্বে থেকে যেতে পারেন তিনি।
তবে হাথুরুসিংহে বললেও শ্রীলঙ্কান বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বড় পরিবর্তন আনতে চান তারা। সেজন্য হাথুরুসিংহেকে সরে দাঁড়াতে বলবে লঙ্কান বোর্ড।
হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করার পর ১০ দলের টুর্নামেন্টে ষষ্ঠ হিসেবে শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। সাত ম্যাচে তিনটি জয় ও চারটিতে হারে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়।
লঙ্কান স্থানীয় পত্রিকার বরাতে আর্ন্তাতিক একটি বার্তা সংস্থা জানাচ্ছে, বিশ্বকাপের দলের পারফরম্যান্সে মোটেও খুশি নন ক্রীড়ামন্ত্রী হাসিন ফার্নান্ডো। যার ফলে হাথুরুকে সরে যেতে বলতে পারেন তিনি।
ইংল্যান্ড থেকে কলম্বোতে ফিরে হাথুরুসিংহে অবশ্য বলেছেন, দলের কাছ থেকে আরও ভালো কিছু আশা করেছিলেন এবং চুক্তির মেয়াদ পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে থাকবেন।
‘আমার চুক্তি আরও ১৬ মাস বাকী আছে। আশা করি, মেয়াদের শেষ পর্যন্ত আমিই চালিয়ে যাব।’
দলের ব্যর্থতা এবং সেমিফাইনালে না যেতে পারার জন্য সব দায় মেনে নেবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরু বলেছেন, ব্যর্থতার এই দায় পুরো টিম ম্যানেজমেন্টের ভাগ করে নেয়া উচিত।
এই অবস্থায় দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে কোচিং বিভাগে বড়সড় পরিবর্তন আনার আশা করছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করা ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা পরিবর্তন সম্পূর্ণ করার জন্য তিন মাস সময় নেব।’ তার কথা ঠিক হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজই হবে শ্রীলঙ্কার হয়ে হাথুরুসিংহের শেষ মিশন।
বোর্ডের বেশিরভাগ সদস্যই নাকি চান হাথুরুকে বরখাস্ত করা হোক। বোর্ডও তাই চায়। তবে একটি জায়গায় হাত-পা বাঁধা আছে এসএলসির। তা হল, বোর্ডের সঙ্গে কোচের চুক্তি। ২০২০ সাল পর্যন্ত লঙ্কান বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত হাথুরু। এই সময়ের আগে বরখাস্ত করলে ২০২০ সাল পর্যন্ত পুরো বেতন বুঝিয়ে দিতে হবে ৫১ বছর বয়সী কোচকে।
তাই অ্যাশলে ডি সিলভাসহ অনেক বোর্ড কর্মকর্তাই চাচ্ছেন নিজ থেকে যেন সরে যান হাথুরু। অথবা তার ক্ষমতা কমিয়ে পদত্যাগের অবস্থাও তৈরি করতে চায় এসএলসি। এই উদ্দেশ্যেই দল নির্বাচনের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে।
হাথুরু যদি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পদত্যাগ না করেন? দেশটির বহুল প্রচারিত দৈনিক লঙ্ককেদেপকে ক্রীড়ামন্ত্রী ফার্নান্ডো বলেছেন, ‘প্রধান কোচ যদি পদত্যাগ করতে অস্বীকার করে, তবে আমরা তাকে জোর করতে পারব না। তবে আমরা তার উপরে অন্য কাউকে নিয়োগ করতে পারি।’
তিনি বলেছেন, ফিল্ডিং কোচ স্টিভ রিক্সন, ব্যাটিং কোচ জন লুইস এবং ফাস্ট বোলিং কোচ রুমেশ রত্নকেকের চুক্তি নবায়ন করা হবে না।
নাটকীয়ভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব ছেড়ে ২০১৮ সালে নিজ দেশের কোচ হওয়ার পর থেকে ক্রমেই নিম্নগামী হাথুরুর পারফরম্যান্স। তার অধীনে পারফরম্যান্সের মান দিন দিন নিচে নামছেই।
পাকিস্তানি মিডিয়ায় খবর, হাথুরুসিংহের জায়গায় লঙ্কানদের কোচ হতে পারেন বাবর-সরফরাজদের কোচ মিকি আর্থার।