চট্টগ্রাম কারাগার থেকে বরখাস্ত কারা তত্ত্বাবধায়ক (জেলার) সোহেল রানা বিশ্বাসকে অর্থ পাচার মামলায় ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই জামিন আদেশ দেন।
সোহেল রানার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী ও শাকিলা রওশন। জামিনের বিরোধীতা করেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।
জামিন আদেশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করবো।’
গত ১৬ জুন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছিলেন।
পরে সেই জামিন আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। পরবর্তীতে এই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
এরপর ঢাকার বিচারিক আদালতে সোহেল রানা আবার জামিন আবেদন করলে সে আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে আবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন সোহেল রানা। সে আবেদনের শুনানি নিয়েই হাইকোর্ট আজ তাকে ৬ মাসের জামিন দেন।
২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর রেলওয়ে পুলিশ বিপুল পরিমাণ টাকা ও মাদকসহ সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে পুলিশ তাকে রেলওয়ে থানায় নিয়ে ব্যাগ তল্লাশি করে ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার তিনটি ব্যাংক এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার তিনটি ব্যাংক চেক, পাঁচটি চেক বই ও ১২ বোতল ফেনসিডিল পায়।
পরে সোহেলের বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় অর্থপাচার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দুটি মামলা করে রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক আশরাফ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানায়, তল্লাশি করে পাওয়া ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা তার নিজের। বাকি টাকা অন্যদের।
গত বছরের ওই ঘটনার আগে সোহেল বিশ্বাস কারাগারে মাদক ব্যবসাসহ শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে একবার বরখাস্ত হন। এছাড়া ২০১০ সালে কর্তব্যে অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এসময় তার চাকরিও চলে যায়।
পরে বিভাগীয় আপিল করে তিনি চাকরি ফিরে পান। তবে টাকা ও মাদকসহ গত বছর গ্রেপ্তারের পর সোহেল রানাকে কারাগারে যেতে হয়।
এরপর নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন সোহেল রানা। গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার জামিন প্রশ্নে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন।
তবে তার আইনজীবী শুনানি শেষে মামলাটি আর চালাবেন না মর্মে আদালতকে জানালে (নন প্রসিকিউশন) আদালত রুল খারিজ করে আদেশ দেন। যার ফলে সোহেল রানাকে কারাগারেই থাকতে হয়।