বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবার হত্যাকাণ্ডের বিচার করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারপতিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বিচারের মধ্য দিয়ে দেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে, বাংলাদেশে ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি যাত্রা শুরু হয়েছে। এখনো কয়েকজন আসামী নাগালের বাইরে থাকলেও দ্রুতই তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের জন্য নির্মিত বহুতল আবাসিক ভবনের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই তিনি একটি দেশের, একটি সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন, তার সবই করে গেছেন। একটি রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ যেন সুসংগঠিত হয়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যেন দেশের মানুষের সেবা করার উপযুক্ত হয়ে ওঠে এবং প্রতিটি স্তরের মানুষের অধিকার যেন নিশ্চিত হয়, সেই ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি আদায় থেকে শুরু করে সবই করে রেখে গেছেন তিনি। জাতির পিতা আজ বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বহু আগেই বিশ্বসভায় একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতো, দারিদ্র্যমুক্ত একটি বাংলাদেশ তিনি গড়ে দিয়ে যেতে পারতেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামীদের সুষ্ঠু বিচারের জন্যও বিচারপতিদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সেই বিচারের অনেকগুলোর রায় ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। একাত্তরে যে অন্যায় এ দেশে হয়েছে, তার প্রতিকারের পথ বেরিয়ে এসেছে রায়গুলোর মধ্য দিয়ে। ভবিষ্যতে এ রায়গুলো থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্মরণ রাখবে, সেই অন্যায়গুলো আর হতে পারে না। ‘একাত্তরের পর থেকে যে বিতর্কগুলো শুরু হয়েছিল, এই বিচারগুলোর মধ্য দিয়ে বিতর্কগুলোকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছে। এজন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এরপর অনেকেরই জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই বিচারপতিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েও সরকার চিন্তা করে। তাই বর্তমান সরকার বিচারপতিদের একটি নিরাপদ সুন্দর আবাসনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করে এসেছে। বিচারিক কাঠামো থেকে শুরু করে আবাসন ব্যবস্থা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে।
দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। নির্মাণ ব্যয় না কমে আরও বাড়লেও সুন্দরভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশে আবাসন প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কেরাণীগঞ্জে বিশেষ আদালত কক্ষের ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। যেন দুর্ধর্ষ আসামীদের টানাটানি না করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় বসেই বিচারপতিরা তাদের বিচারকাজ চালাতে পারেন।